বিচারবহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে
বিচারবহির্ভূত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমণ্ডির ফখরুদ্দিন কনভেনশন সেন্টারে জাতীয়তাবাদী প্রাক্তন ছাত্রকল্যাণ পরিষদ রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার আয়োজনে ইফতার মাহফিলে তিনি এই আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দুঃশাসন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। এই অভিযানকে আমরা শুরু থেকে প্রশ্নবিদ্ধ বলেছি। বার বার বলে আসছি এর পেছনে ভিন্ন কারণ আছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল হচ্ছে এ অভিযানের টার্গেট। সে উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের কমিশনার একরাম সাহেবকে হত্যা করা হলো। এলাকার সবাই বলছেন, তিনি ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। প্রকাশিত অডিও প্রমাণ করে যে অভিযান সরকার ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করছে। এভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যা চলতে পারে না। কোনো জংলি দেশে এমন অবস্থা আছি নাকি? এর বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ট্র্যাফিক সিস্টেম থেকে শুরু করে দেশের সবকিছুতে অচল অবস্থা। সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে, সুশাসন বলতে কিছু নেই। যে কারণে জনজীবন অতীষ্ঠ আজ। কেউ কোথাও বিচার পায় না। না আদালতে, না অন্য কোথাও। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। সমগ্র জাতিকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তার জন্য জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। সব স্তরের জনগণ নিয়ে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এ দানবীয় সরকারকে সরাতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে মহাসচিব বলেন, অন্যায়ভাবে বেগম জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট জামিন দিলেও আপিল বিভাগের মাধ্যমে সেটি স্থগিত করা হয়েছে। এসব কিছুই হচ্ছে সরকারের ইচ্ছেতে। কারণ এ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সবকিছু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাঁকে কারাগারে রেখে এদেশে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। খালেদা জিয়া, মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা।
আজ দেশে যে সমস্যা চলছে এটা শুধু বিএনপির একার সমস্যা নয়। খালেদা জিয়ার একার সমস্যা নয়। এই সমস্যা সমগ্র জাতির। আজকে সমগ্র জাতিকে রুখে দাঁড়াতে হবে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে, দেশকে ধ্বংস করে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র, দেশকে দুর্বল করে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র এই ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হলে অবশ্যই একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। জনগণের ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। একই সঙ্গে সমস্ত রাজনৈতিক দল, সমস্ত পেশাজীবী, সকলের একটা ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মধ্য দিয়ে এই যে দানব আমাদের ওপর চেপে বসেছে সেই দানবকে যদি সরাতে হয় তাহলে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। আজকে সেই ঐক্য সৃষ্টি করে একটা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকারকে সরাতে হবে।
আগামী বাজেট নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, এবারও অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন বিশাল বড় একটি বাজেট তিনি নিয়ে আসবেন। এই বাজেট যখন তিনি নিয়ে আসেন তখন আমরা ট্যাক্সপেয়াররা তোয়াস গুণতে থাকি। আমাদের ওপর কত ট্যাক্সের বোঝা আরোপ হবে। কিভাবে ট্যাক্সের বোঝা আরোপ হবে। সেগুলো নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত উদ্বিগ্ন হতে থাকি।