আমরা এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছি : মোশাররফ
নির্বাচনী বছরে ভোট আকর্ষণে প্রতারণার বাজেট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এ বাজেট ধনীকে ধনী করার বাজেট। এ বাজেট দরিদ্র আরো দরিদ্র হবে। এ বাজেট জনগণের স্বার্থে নয়। নির্বাচনী বছরে ভোটের আকর্ষণের জন্য এই এত ঘাটতির একটি বিশাল বাজেট দেওয়া হয়েছে। শুধু জনগণের থেকে প্রতারণা করে ভোট আকর্ষণ করার জন্য। তাই এটা নির্বাচনী বাজেট। আমরা এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করছি। এই বাজেট জনগণের কোনো উপকারে আসবে না। আমরা তার প্রতিবাদ করছি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ঋণের বোঝা বাড়িয়ে ঋণ নির্ভর বাজেটের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট সম্ভব হবে না। কারণ ঘোষিত বাজেটে ধনী আরো ধনী এবং গরিব আরো গরিব হবে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়ে ২০ দলীয় জোটকে প্রস্তুতি নিতে হবে। খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। যা কখনও সফল হবে না।
ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ ইব্ররাহিম। এতে আরো বক্তব্য দেন এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, ন্যাপের যুগ্ম মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, বিজেপির মহাসচিব সউদ, বিজেপির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য লিংকন প্রমুখ।
এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে লোক দেখানো বড় আকারের বাজেট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন তিনি।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘বিগ বিউটিফুল ব্লু বেলুন। কিন্তু ভেতরে কিছু নাই। লোক দেখানোর একটা বাজেট। বিশাল বাজেট হলেই বিশাল উন্নয়ন হয় না। এর মধ্যে দুর্নীতি এবং এর অর্থের একটা বিরাট অংশ দুর্নীতির মধ্য দিয়ে চলে যাবে।’
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘বিগ বিউটিফুল বিউ বেলুন। কিন্তু ভেতরে কিছু নাই। লোক দেখানোর একটা বাজেট। বিশাল বাজেট হলেই বিশাল উন্নয়ন হয় না। এর মধ্যে দুর্নীতি এবং এর অর্থের একটা বিরাট অংশ দুর্নীতির মধ্য দিয়ে চলে যাবে।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আজ চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। গত অর্থবছরের বাজেট ছিল চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকা।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে দুপুর ১২টা ৫৩ মিনিটে বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর বাজেট বক্তৃতার শিরোনাম হচ্ছে ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ।’
প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি আছে এক লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী জানান, বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। তিনি জানান, ঘাটতি অর্থায়নে বৈদিশিক সূত্র থেকে ৫৪ হাজার ৬৭ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে ৭১ হাজার ২২ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, মোট রাজস্ব আয় তিন লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে এ যাবৎ আমাদের গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং গত দুই বছর এ প্রবৃদ্ধির হার হয়েছে ৭ শতাংশের ঊর্ধ্বে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাময়িক হিসাবমতে আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ।’
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা এখন এই মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছি।’