‘সরকারের কাছে বলো, আমাকে যেন আর না মারে’
‘তোমরা একটা সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের কাছে বলো, আমাকে যেন আর না মারে। আমি সরকারের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন করিনি। সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে থেকে চাকরির আন্দোলন করেছি। আমাকে যেন সরকার মুক্তি দেয়।’
গতকাল মঙ্গলবার পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা মুহাম্মদ রাশেদ খানের সঙ্গে কিছুক্ষণের জন্য দেখা হয় তাঁর মা সালেহা বেগমের। তখন রাশেদ তাঁর মাকে এসব কথা বলেন। আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সালেহা।
ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সালেহা বেগম জানান, গতকাল মঙ্গলবার ‘কয়েক মিনিটে’র জন্য রাশেদের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়।
রাশেদ খাঁন সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক। গত ১ জুলাই শাহবাগ থানায় রাশেদ খানের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে মামলা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান জয়। ওইদিনই মিরপুরের ভাষানটেক এলাকা থেকে রাশেদ খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ৮ জুলাই দুই মামলায় রাশেদকে ১০ দিনের রিমান্ড দেন আদালত। আইসিটি মামলা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনে ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে রাশেদকে।
সংবাদ সম্মেলনে সালেহা বেগম বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে ছেলেকে পাঠাইছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। বড় আশা ছিল লেখাপড়া শেষ করে আমার মনি (রাশেদ) ভালো চাকরি করব। কিন্তু এখন কী হইল? আমার মনিরে হাতকড়া পরাইল। রিমান্ডে নিল। আমি এখন চাকরি চাই না, আমার মনির (রাশেদ) মুক্তি চাই।’
সালেহা বেগম প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি তো মা। সন্তানরা মায়ের কাছে চাকরির দাবি জানিয়েছে। তারা সরকারের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন করেনি। আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। দয়া করে তাকে মুক্তি দেন।’
এ সময় রাশেদের স্ত্রী রাবেয়া আলো বলেন, ‘ডিবি অফিসে রাশেদকে দেখে মনে হয়েছে তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। দীর্ঘ রিমান্ডে সে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার মুক্তি চাই। মুক্তি পেলে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে আর আন্দোলনে যেতে দেব না।’
রাশেদের বোন সোনিয়া খাতুন বলেন, ‘ভাইয়ার কষ্টে আমার মায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। তাঁর যেকোনো সময় অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছি। আমার ভাইয়া কোনো রাজনীতি করে না। টিউশনি করে রোজগার করেন। তাঁকে মুক্তি দিন।’