হাসনাত করিমকে অব্যাহতি, অভিযোগপত্র আমলে
রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলায় অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবর রহমান এ আদেশ দেন। এ ছাড়া পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিন করেন আদালত।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী আতাউর রহমান এ বিষয়ে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে বলেন, আজ মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেওয়ার ফলে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।
আতাউর জানান, এর ফলে হাসনাত করিম মুক্তি পেয়ে যাবেন। তাঁর পক্ষে কোনো জামিন আবেদনের প্রয়োজন নেই।
গত ২৯ জুলাই ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের মাধ্যমে সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে হলি আর্টিজান মামলার নথি এসে পৌঁছায়।
এদিকে, গত ২৩ জুলাই ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে আট জঙ্গির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে ২১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে আটজন আসামি বিভিন্ন অভিযানে ও পাঁচজন হলি আর্টিজানে অভিযানের সময় নিহত হয়েছে। এ ছাড়া জীবিত আটজনের মধ্যে ছয়জন কারাগারে ও বাকি দুজন পলাতক।
অভিযানে নিহত পাঁচ জঙ্গি হলো রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।
এ ছাড়া বিভিন্ন ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানে নিহত আটজন হলো—তামীম আহমেদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।
কারাগারে থাকা ছয় আসামি হলো—জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান ও হাদিসুর রহমান সাগর।
এ ছাড়া পলাতক দুই আসামি হলো শহীদুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা করেন আদালত।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। হামলার পর রাতেই তারা ২০ জনকে হত্যা করে।
সেদিনই উদ্ধার অভিযানের সময় বন্দুকধারীদের বোমার আঘাতে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। পরের দিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজনের মৃত্যু হয়।
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির মুখপত্র ‘আমাক’ হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে বলে জানায় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স’।
এ ঘটনায় গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। মামলার পর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে দুই দফা রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, এ মামলায় কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে আটক রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি এ মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।