অজানা তথ্য জানাতে ইসি সচিবকে চার কমিশনারের ইউনোট!
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সব অজানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে যাতে চার নির্বাচন কমিশনারকে অবহিত করা হয় সেজন্য তাঁরা ইসি সচিব বরাবর একটি আন-অফিশিয়াল নোট (ইউনোট) দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানান।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সামগ্রিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে যাতে আমাদের (চার নির্বাচন কমিশনার) জানানো হয় সেজন্য একটি ইউনোট দেওয়া হয়েছে ইসি সচিবকে। ওই ইউনোটে চারজন নির্বাচন কমিশনার সিগনেচার করেছেন।’
কমিশনার আরো বলেন, ‘চার নির্বাচন কমিশনারই সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানতে চান। আমরা সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানতে পারলে মতামতও দিতে পারব। যেকোনো একটি বিষয় হওয়ার পরে না জানিয়ে আগে থেকে যাতে জানানো হয় সেজন্যই এই ইউনোট নেওয়া।’
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বরাবর গত সপ্তাহের শেষের দিকে ইউনোট দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকেও ইউনোটের একটি কপি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনার তো শুধু একটি পদই নয়। এখানে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিরও বিষয়। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আমাকে জানানো হলো না অথচ সেখানে অনেক ভুল হয়েছে কিংবা ঠিকঠাক মতো সব কিছু করা হয়নি। তখন তো এটা বিরাট সমস্যা। কিন্তু আমরা জানলে আর ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।’
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানাতে ইসি সচিবকে ইউনোট দিয়েছেন। তার মানে কি এই যে সচিবালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনাদের আগে থেকে জানানো হতো না-এমন প্রশ্নে কমিশনার রফিকুল বলেন, ‘বিষয়টা তেমন হয়তো নয়। আগে জানাতো কাগজের মাধ্যমে ফাইলের ভেতরে। একটি ফাইলের ভেতরে মনে করেন ৫০ পৃষ্ঠা আছে। সব পৃষ্ঠা কি পড়ে দেখা সম্ভব? কিন্তু আমাকে যদি মুখে বলা হয় তাহলে তো বিষয়টি আমি ভালোভাবেই জানতে পারি। মতামতও দিতে পারব। ভুল-ত্রুটিও ধরিয়ে দিতে পারব।’
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন- ইভিএম ব্যবহারের বিধান যুক্তের বিষয়কে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনারদের মতপার্থক্যের শুরু হয়। ইভিএমের বিরোধিতা করে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কমিশন সভা বর্জন করেছিলেন। নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার পরও অপর তিন নির্বাচন কমিশনার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে একমত পোষণ করে আরপিও সংশোধনের জন্য সুপারিশ করে তা অনুমোদন করেন ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান।
এদিকে সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২২ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। এই প্রশিক্ষণের বিষয়েও চার কমিশনারের মতামত নেওয়া হয়নি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও সিইসি ও সচিব ছাড়া চার কমিশনারকে দেখা যায়নি।
এ ছাড়া ঢাকায় অনুষ্ঠিত ফেমবোসা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। গত ৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সার্কভুক্ত দেশগুলোর দুই দিনব্যাপী ওই সম্মেলন নিয়েও কমিশনারদের মতামত নেওয়া হয়নি। পুরো পরিকল্পনা সিইসি ও সচিবের মতামত অনুসারেই হয়েছে বলেও জানা গেছে।