‘দেশে রাজনৈতিক কোনো সমস্যা নেই’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘দেশে রাজনৈতিক কোনো সমস্যাই নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে চলছে। সংবিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাংলাদেশে এই সরকার কোনো কিছুই করে নাই এবং আমরা সংবিধানের ধারাবাহিকতায় সংবিধান সম্মত যে কাজ সেটাই করে যাব।’
আজ মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জে জেলা রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
সংলাপের মাধ্যমে চলমান রাজনৈতিক সমস্যাগুলোর সমাধান হবে কি না— এমন প্রশ্ন করা হলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো মনে করি, রাজনৈতিক কোনো সমস্যাই নেই। এখন সমস্যাগুলো আপনি চিহ্নিত করেন, আমি তারপর জবাব দেব। রাজনৈতিক ককোনো সমস্যাই নেই। বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে চলছে। সংবিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাংলাদেশে এই সরকার কোনো কিছুই করে নাই এবং আমরা সংবিধানের ধারাবাহিকতায় সংবিধান সম্মত যে কাজ সেটাই করে যাব।’
বিদেশের চাপে পড়ে আওয়ামী লীগ সরকার সংলাপের সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সংবিধান সম্মত সব বিষয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দরজা খোলা বলেও তিনি দাবি করেছেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘আপনারা হয়তো এতক্ষণে জেনেছেন, যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপের জন্য ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন আবেদন করলে পরে তিনি তাঁর জবাবে কী বলেছেন সেটা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন যে, বাংলাদেশে অনেক রক্তের বিনিময়ে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে গণতন্ত্র অর্জিত হয়েছে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য, সংবিধান সম্মত যেকোনো আলোচনার ব্যাপারে তাঁর দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। এতেই বোঝা যায় যে, কোনো বৈদেশিক চাপে না, এবং আপনারা জানেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আত্মমর্যাদাশীল একজন ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশকে একটা মর্যাদার আসনে তিনি বসিয়েছেন। তো সেই ক্ষেত্রে তিনি কোনো বিদেশি চাপে নত হওয়ার মতো মানুষ নন। তারপরও আমি শুধু বলব, যে বিদেশি কোনো চাপ ছিল না। ’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, আদালত থেকে দণ্ড পাওয়া কোনো ব্যক্তি সাজা ভোগের পাঁচ বছর পর এমপি হিসেবে নির্বাচন করতে পারবেন। তাই, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এখন নির্বাচন করতে পারবেন কি না— সেটা এখন আদালতই ঠিক করবেন বলেও মন্তব্য করেন আইনমন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে, যে সংবিধানে বলা আছে যে, কোনো ব্যক্তি যদি নৈতিক স্খলনের জন্য, কারাদণ্ডে অভিযুক্ত এবং সেন্টেসন্ড হন এবং তাঁকে যদি আদালত দুই বছর বা তাঁর অধিক সাজা দেন, তাহলে তিনি সাজা খাটার পর আরো পাঁচ বছর নির্বাচন করতে পারবেন না এমপি হিসেবে। কিন্তু এই ব্যাপারে, সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশের দুটো রায় আছে। সেগুলোর একটায় বলা আছে, উচ্চ আদালত আপিলে যদি তাঁর সাজাটা স্থগিত রাখেন, তাহলে তিনি করতে পারবেন। আরেকটা রায়ে বলা আছে, যেটা বিভক্ত রায়, একজন বলেছেন যে পারবেন। একজন বিচারপতি বলেছেন, পারবেন। আরেকজন বলেছেন, পারবেন না। আমাদের সর্বোচ্চ আইন এবং সব আইনের ঊর্ধ্বে যে আইন, সেটা হচ্ছে সংবিধান। সংবিধানকে যখন এটা বলেছেন, আমার মনে হয়, যে এটা আদালতই সিদ্ধান্ত দিবেন, যে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন কি পারবেন না।’
ঢাকা ও চট্টগ্রামের পর নারায়ণগঞ্জে আজ তৃতীয় রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স উদ্বোধন করা হলো। ৫০ শতাংশ ভূমির ওপর প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে এই কমপ্লেক্স নির্মাণে।
নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. খান মো. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, নারী সাংসদ হোসনে আরা বাবলী ও জেলা প্রশাসক মো. রাব্বী মিয়া।