শোলাকিয়ায় ঈদের ১৮৮তম জামাত অনুষ্ঠিত
দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া মাঠে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এবারের জামাতটি ছিল ১৮৮তম ঈদ জামাত।
জামাতে ইমাম হিসেবে নামাজ পরিচালনা করেন স্থানীয় শামসুদ্দিন ভূইয়া মারকাজ মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান। নামাজ শেষে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী নেতাসহ সর্বস্তরের বিপুলসংখ্যক মানুষ জামাতে অংশ নেন।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক জি এস এম জাফরউল্লাহ বলেন, আজ লক্ষাধিক মুসল্লি জামাতে অংশ নেন। জামাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই মুসল্লিদের ঢল নামে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে। এ সময় কয়েক ঘণ্টার জন্য আশপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা যায়।
শোলাকিয়ার ঈদ জামাতে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয় সরকারিভাবে। এর একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং অপর ট্রেনটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি নিয়ে শোলাকিয়ায় যায়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান জানান, সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের জন্য জেলা প্রশাসন ও ঈদগাহ কমিটির পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মাঠে নিরাপত্তার জন্য বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন ছিল।
মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হজরত খানবাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে পরিণত হয়ে যায় ‘শোলাকিয়া’ মাঠ।
ঈদগাহের মোট কাতারের সংখ্যা ছিল ২৬৫টি। সাধারণত প্রতি কাতারে পাঁচ শতাধিক মুসল্লি নামাজে অংশ নেন।