নারায়ণগঞ্জের বিএনপির নেতা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে নগরীর চাষাঢ়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে তিন-চারটি মামলা রয়েছে। সেই মামলার তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। সেই ইস্যুতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হুমায়ুন কবীর জানান, গ্রেপ্তারের পর সাখাওয়াত হোসেনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সদর মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে নারায়ণগঞ্জে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ২৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। ওই মামলায় আটক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর সকালে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদীন।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, ৩০ অক্টোবর দুপুরে মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালামের অর্থায়নে বিএনপির নেতাকর্মীরা নগরীর চাষাঢ়ায় সমবেত হয়ে গোপন বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে বিএনপির নেতাকর্মীরা জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রসহ ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জকে বিচ্ছিন্ন করার গভীর চক্রান্ত করছিলেন। সেখান থেকে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুটি পুরাতন ভাঙা লাল স্কচটেপ মোড়ানো জর্দার কৌটা ও চারটি ইটের টুকরা জব্দ করে। ঘটনার সময়ে আটক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ, বিএনপি নেতা নাজমুল হাসান, ইয়াছিন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ওই মামলার অন্য আসামিরা হলেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, মহানগর বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা, মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি রাফিউদ্দিন রিয়াদ, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আনোয়ার প্রধান, অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাষানী, সাবেক কাউন্সিলর হাসান আহমেদ, মোয়াজ্জেম হোসেন মন্টিসহ অজ্ঞাত আরো আটজন। এই মামলাতেই মহানগর বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিপরীতে বিএনপিদলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনায় আসেন অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান। ওই নির্বাচনে পরাজিত হলেও এর পর পরই তিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সহসভাপতির পদ পেয়ে পান। এর আগে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনার মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী হয়ে আলোচিত হন তিনি।