সেনাবাহিনী আর কোনোদিন ক্ষমতা নেওয়ার সাহস পাবে না : শেখ সেলিম
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনোদিন তৃতীয় শক্তি আসবে না। সেই সুযোগ নাই। প্রথম শক্তি, প্রথম শক্তিই থাকবে।’
আজ সোমবার জাতীয় সংসদের অধিবেশেন শেখ সেলিম এ কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আপনাকে বসাবে, এটা আপনাকে কে বলেছে? আপনাকে কে আশ্বাস দিয়েছে? ওই ছোকড়া, ফোকড়া কিছু অবসরপ্রাপ্ত (রিটায়ার্ড) সেনা কর্মকর্তা (আর্মি অফিসার) যদি আশ্বাস দিয়ে থাকে, তাহলে আপনি মনে রাখেন আপনার কপালে দুঃখ আছে। কারণ আমাদের সংবিধানে আছে যে অবৈধভাবে ক্ষমতায় যাবে, যে তার অংশীদার হবে, তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সুতরাং এখন আর ওই সুযোগ-সুবিধা নাই।’
শেখ সেলিম আরো বলেন, ‘আর যারা ক্ষমতা নিয়েছেন, জিয়াউর রহমান নিয়েছিলেন, (অপর প্রান্তে উপস্থিত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দেখিয়ে) আমাদের হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সাহেবও নিয়েছিলেন, কিন্তু ওনারাই লাভবান হয়েছেন। সাধারণ সেনাবাহিনীর লোক কেউই লাভবান হয়নি। ... এই যে মইনউদ্দিন, ফখরুদ্দীন দেশের বাইরে গিয়ে পালিয়ে আছে। সুতরাং এ সেনাবাহিনী আর কোনোদিন ক্ষমতা নেওয়ার সাহস পাবে না।’
‘বিদেশি হস্তক্ষেপ চলবে না’
শেখ সেলিম বলেন, ‘যারা মানবাধিকারের কথা বলে, বিদেশ থেকে আসে, তাদের বলি যে, আপনারা ওইখানে মানবাধিকারের কথা বলেন না কেন? আপনারা সুশীলসমাজ ওই সরকারকে তো বলেন নাই যে ওই আলকায়েদা ওই জঙ্গিদের সঙ্গে আপনারা আলোচনা করেন। তা বাংলাদেশে আপনারা এত চুলকাতে আসেন কেন? বাংলাদেশে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ চলবে না।’
সংলাপের বিষয়টি নিয়ে কথা বলা বিদেশি কূটনীতিবিদদের সমালোচনা করে শেখ সেলিম বলেন, ‘খালেদা জিয়া কে? সে না আছে সরকারে, না আছে বিরোধী দলে। আপনাদের (বিদেশি কূটনীতিক) যদি কোনো আলোচনা করতে হয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন, বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করবেন। ওই অনির্বাচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করা আপনাদের উচিত হবে না। আর এর বাইরে যদি আপনারা কিছু করতে চান, তাহলে আপনাদের বাংলাদেশে এই কূটনীতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করার জন্য যেটা করার আমরা সেটা করব।’
‘সুশীলসমাজ কখনো বাংলাদেশের পক্ষে থাকে নাই’
সুশীলসমাজের সমালোচনা করে শেখ সেলিম বলেন, ‘আমাদের দেশে এক ধরনের সুশীলসমাজ আছে, তারা এ সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদীদের উৎসাহিত করছে। নাগরিক কমিটি, সুশীল কমিটি অপরাধীদের রক্ষা করার জন্য এ সংলাপের কথা বলছে। আলোচনার কথা বলছে। কার সঙ্গে সংলাপ? অপরাধীদের সঙ্গে সংলাপ? এরা কারা? এ সুশীল কোথা থেকে আসল? কে তাদের সুশীল বানাল? নিজেরা নিজেরা সুশীল। এ সুশীলসমাজ কখনো বাংলাদেশের পক্ষে থাকে নাই। ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কয়জন সুশীল সেদিন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল? ওই পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে অধিকাংশ সহযোগিতা করেছিল। এক-এগারোর সময় এ সুশীলসমাজের চেহারা কী ছিল? এক-এগারোর সময় এ সুশীলসমাজ ওই অগণতান্ত্রিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সেনাবাহিনী সমর্থিত (আর্মি ব্যাক) সরকারের পিছে গিয়ে তাদের সঙ্গে ক্ষমতার অংশ নেন। এদের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি আরো বলেন, অসাংবিধানিক সরকার এলে তাদের জন্য খুব আরাম হয়। কারণ সেখানে দুই-চারটা ভালো কথা কইতে পারে আর বিনিময়ে কিছু পাইতে পারে বা একটা উপদেষ্টা, মন্ত্রী হতে পারে।’
‘চিহ্নিত কিছু জঙ্গি আছে ওই বাসায়’
শেখ সেলিম দাবি করেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে চিহ্নিত জঙ্গি আছে। তিনি বলেন, ‘পেট্রলবোমা যারা মারছে চিহ্নিত কিছু জঙ্গি ওনার ওই বাসার মধ্যে আছে। পুলিশের কাছে রিপোর্ট আছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে রিপোর্ট আছে। ১৫ থেকে ২০ জনের মতো ওখানে আছে। যারা এ অপকর্মের নির্দেশ দিয়েছে, অর্থ দিয়েছে এবং বিভিন্নভাবে মানুষকে পুড়িয়েছে।’ এদের বাঁচাতেই খালেদা জিয়া ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে যাননি বলে দাবি করেছেন শেখ সেলিম।