আজ থেকেই দিনগণনা শুরু, বললেন অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের দিন থেকে আসামিপক্ষ রিভিউয়ের (পুনর্বিবেচনা) জন্য ১৫ দিনের সময় পাবে। যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আজ বুধবার মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মুজাহিদের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে, সেহেতু আজ থেকেই রিভিউয়ের দিন গণনা শুরু হবে।
আজ বিকেলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন। রায়ের কপি আসামি ও তাঁদের আইনজীবী, অ্যাটর্নি জেনারেল, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে।
রায় প্রকাশের পরই রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ‘তবে রাষ্ট্রপক্ষ এ সময়ে বসে থাকবে না। তারা রায় কার্যকরের জন্য প্রস্তুতি শুরু করবে।’
আগামী ১ নভেম্বর পর্যন্ত নিয়মিত বেঞ্চের ছুটি রয়েছে- সাংবাদিকরা এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘অবসরকালীন বেঞ্চ এ বিষয়ে নির্দেশ দিতে পারবেন।’
গত ১৬ জুন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আপিলের এই বেঞ্চই মানবতাবিরোধী অপরাধে গত ২৯ জুলাই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় বহাল রাখেন। আজ বুধবার ১৯১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিভিন্ন অংশের ওপর আলোকপাত করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। পূর্ণাঙ্গ রায়ের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘মুজাহিদ একাত্তরে আলবদর বাহিনীর নেতা হিসেবে বুদ্ধিজীবী হত্যায় সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন। জাতিকে মেধাশূণ্য করতে বুদ্ধিজীবীদের খোঁজে খোঁজে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করেছেন।’
‘সাকাও একইভাবে ঠাণ্ডা মাথায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হত্যার পরিকল্পনাকারী ও নকশাকারী হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ড নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি এতে জড়িত ছিলেন।’ যোগ করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সাকার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও মুজাহিদের আইনজীবী শিশির মনির এনটিভি অনলাইনকে জানান, রায়ের পূর্ণ কপি হাতে পাওয়ার পর তাঁরা রিভিউ আবেদন করবেন। তাঁরা আশা করেন, আসামিরা খালাস পেয়ে যাবেন।
আসামি পক্ষের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ হয়ে গেলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না। তবে এর আগে দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে পারেন তাঁরা।