ভিকারুননিসার তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ৯ জানুয়ারি
অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে আগামী ৯ জানুয়ারি।
আজ বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার অরিত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী। মামলায় আসামি করা হয়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, শাখাপ্রধান জিন্নাত আরা ও শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন তালুকদার।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান জানান, আজ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ মামলার এফআইআর ( প্রাথমিক তথ্য বিবরণী ) এসে পৌঁছায়। পরে বিচারকের কাছে উপস্থাপন করা হলে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেন।
এদিকে, আজ দুপুরে এ মামলার তদন্তভার আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) পাঠানো হয়েছে। তাই, এই মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়টি এখন ডিবিই পরিচালনা করবে।
গত রোববার পরীক্ষার হলে নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন পান এক শিক্ষিকা। মোবাইল ফোনটি রেখে দিয়ে তিনি অরিত্রীর বাবা-মাকে নিয়ে পরের দিন আসতে বলেন। পরের দিন সোমবার বাবা-মাকে নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেন বাবা দিলীপ অধিকারী। পরে বাসায় গিয়ে অরিত্রীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
এরপর দিলীপ অধিকারী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা ভাইস প্রিন্সিপাল ও প্রিন্সিপালের রুমে গিয়ে তাদের ওই অভিযোগ শুনি। জোর হাত করে ক্ষমা চাই। মেয়েও পায়ে ধরে ক্ষমা চায়। কিন্তু তাঁরা কোনো কিছুই শুনতে না চেয়ে বের হয়ে যেতে বলেন। বলেন, বের হয়ে যান, কাল এসে টিসি নিয়ে যাবেন। এ সময় দ্রুত বাসায় চলে যায় অরিত্রী। পেছনে পেছনে আমরাও যাই। বাসায় গিয়ে দেখি সে নিজের ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকেল সাড়ে ৪টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এদিকে, এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পরে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, তাঁর মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষক দায়ী।
এ ঘটনায় আজকে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। পরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের (প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) সকল শাখার ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।