গৃহবধূ হত্যা মামলায় স্বামী ও সতীনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
রাজশাহীতে গৃহবধূ হত্যা মামলায় স্বামী ও সতীনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আলতাফ হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ছাড়াও প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন।
২০১১ সালে নগরীর সিলিন্দা এলাকায় নিহত হন সাজেদা খাতুন। সাজেদাকে হত্যার দায়ে সাজেদার স্বামী হারুনুর রশিদ ও হারুনুর রশিদের আরেক স্ত্রী মনোয়ারা খাতুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জানা যায়, দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার রামনগর গ্রামের হারুনুর রশিদের সঙ্গে প্রায় ১০ বছর আগে রাজশাহী নগরীর শিরোইল এলাকার সাজেদা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর হারুন ও সাজেদা নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভাড়া থাকতেন। এর মধ্যে তারা দুই সন্তানের বাবা-মা হন। এরপর হারুন প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই মনোয়ারা খাতুন নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাকেও নগরীর সিলিন্দা এলাকার আতাউল হকের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেখানে প্রথম স্ত্রী সাজেদা ও দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারাকে নিয়ে হারুন বসবাস করতেন।
এর মধ্যে ২০১১ সালের ২২ জুন কোনো এক সময় হারুন ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারা বেগম মিলে সাজেদা খাতুনকে হত্যা করে লাশ ঘরের মধ্যে ফেলে রেখে আগের দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান। এরপর ৩০ জুন ওই বাড়িতে গিয়ে সাজেদার মা রাখি বেগম তালাবদ্ধ ঘরে মেয়ের পঁচা গন্ধযুক্ত লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সাজেদার গলিত লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ওই দিনই রাখি বেগম মেয়ে জামাই হারুন ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মনোয়ারাকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় ২০১২ সালে ৩০ জুন তদন্তকারী কর্মকর্তা সিরাজুম মনির দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বুধবার বিচারক দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রায় দেন।
রাজশাহী মহানগর আদালতের আইনজীবী আব্দুস সালাম জানান, রাষ্ট্রপক্ষে তিনি এবং আসামি পক্ষে সাইদুর রহমান সরকার মামলাটি পরিচালনা করেন।