রামপাল নিয়ে প্যারিসে আলোচনা হবে : টিআইবি
ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠেয় জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে বাংলাদেশ প্রশ্নের মুখে পড়বে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ সম্মেলনের আগেই এ নিয়ে সরকারকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শ দেওয়া হয় সংস্থাটির পক্ষ থেকে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাববিষয়ক বাংলাদেশের কয়েকটি প্রকল্পের অর্থ উত্তোলনে অনিয়ম হয়েছে বলেও টিআইবি জানায়।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে টিআইবির প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর প্রথম দিকে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কাটাতে না পারলে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ১০ শতাংশ ভূমি হারিয়ে যাবে। শরণার্থী হবে দেশের তিন কোটি মানুষ।
আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে প্যারিসে শুরু হবে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন কপ-২১।
জলবায়ু অর্থায়নে উন্নত দেশের প্রতিশ্রুতি এবং তহবিল ব্যবহারে বাংলাদেশের স্বচ্ছতার ওপর এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে জানানো হয়, উন্নত দেশগুলো তাদের শর্ত মানছে না, বরং অনুদানের বদলে শিল্পোন্নত দেশগুলো ঋণ হিসেবে অর্থ দিয়ে লাভজনক ব্যবসা করছে। পাশাপাশি এ অর্থ ব্যবহারে বাংলাদেশ সরকারের সক্ষমতা দেখাতে পারছে না বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো (যারা দায়ী) অর্থ ছাড় করছে না। পাশাপাশি যতটুকু অর্থছাড় করছে, তা আবার বিভিন্ন সুকৌশলে উন্নয়নের জন্য যে সহায়তা, যেখান থেকে ডাইভার্ট (ঘোরানো) করার চেষ্টা করছে। এমনকি, খুবই দুর্ভাগ্যজনক বিষয়টি, কোনো কোনো মহল থেকে এ ক্ষতিপূরণের অর্থটাকে ঋণ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাংলাদেশকে সুরক্ষা প্রদানকারী সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অবধারিতভাবে আলোচনা হবে বলে জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, রামপাল বিষয়টি প্যারিসে আলোচনা হবে। সেখানে সরকার, আমাদের সরকারের প্রতিনিধিদল বিব্রত হোক, আমরা সেটা চাই না। আমরা মনে করি, এ বিষয়টির পরিবেশগত প্রভাব সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠুভাবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মূল্যায়নের ওপর ভিত্তি করে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। সরকার সেটা জনগণের সামনে প্রকাশ করবে।’
আসন্ন এ সম্মেলনে বাংলাদেশ যেন শক্ত অবস্থান নেয়, সে জন্য ১০টি দাবি তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে।