‘ট্রাইব্যুনাল সুযোগ দেননি, আশা করি আপিল বিভাগ দেবেন’
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলায় ন্যায়বিচারের জন্য সাফাই সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দেননি বলে অভিযোগ করেছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাকা চৌধুরীর প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তবে আপিল বিভাগ এই সুযোগ দেবেন বলে আশা করেন তিনি।
আজ সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের শফিউর রহমান মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার মাহবুব এ কথা বলেন।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে সাতজন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন জানিয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমি মনে করি ওপরে আল্লাহ আর নিচে আপিল বিভাগ। রিভিউ শুনানির আগে সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগ তাঁর নিজস্ব ক্ষমতাবলে এ আবেদনগুলো শুনানি করতে পারবেন।’
ট্রাইব্যুনালে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচারকাজ চলাকালে এসব সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল বলে জানান খন্দকার মাহবুব। তিনি বলেন, ‘কিন্তু ট্রাইব্যুনাল তখন সে সুযোগ দেননি। আমরা আশা করি আপিল বিভাগ নিজস্ব ক্ষমতাবলে এটি গ্রহণ করবেন এবং ন্যায়বিচারের সুযোগ করে দেবেন।’
তিনি নিজে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের পক্ষে জানিয়ে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘তবে কেউ যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয় সেটি লক্ষ রাখতে হবে। কারণ এখানে জীবন-মরণের প্রশ্ন। ট্রাইব্যুনাল আইনে ভুল আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে নতুন করে এ আবেদন করা হয়েছে।’
এর আগে বাংলাদেশের হাইকোর্টের বর্তমান একজন বিচারপতি ও তাঁর মা ট্রাইব্যুনালে সাফাই সাক্ষ্য দিতে চেয়েছেন বলে জানান খন্দকার মাহবুব। এ ছাড়া এ সাক্ষী-তালিকায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ চার নাগরিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক কূটনীতিক রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আজ সোমবার সাক্ষীদের পক্ষে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম আল-ফেসানী আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন।
২০১৩ সালের ১ অক্টোবর চেয়ারম্যান বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ২৩টি অভিযোগের মধ্যে চারটিতে তাঁকে ওই শাস্তি দেওয়া হয়। এ ছাড়া তিনটি অভিযোগে তাঁকে ২০ বছরের ও দুটি অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
এরপর নিয়ম অনুযায়ী সাকা চৌধুরীও রায়ের বিরুদ্ধে যান আপিল বিভাগে। তবে সেখানেও তাঁর সর্বোচ্চ সাজার রায়ই বহাল থাকে। ৩০ সেপ্টেম্বর মুজাহিদের সঙ্গে তাঁরও মামলার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। এরপর দুজনের রায়েরই পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি একসঙ্গে আসে ট্রাইব্যুনালে। এরপর ১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা জারি করলে তা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে দেওয়া হয়।
সর্বশেষ রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন সাকা চৌধুরী। এটা খারিজ হলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা করতে হবে তাঁকে।