হোসেনী দালানের সামনে বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ১
রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে হোসেনী দালানের সামনে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে একজন মারা গেছেন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম সাজ্জাদ হোসেন সানজু। ঘটনার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া আহত ব্যক্তিদের ঢামেক ও স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ (মিটফোর্ড) স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিবছরের মতো মহররমের রাতে শিয়া সম্প্রদায়ের এ তাজিয়া মিছিলের শামিল হতে সমবেত হয়েছিল শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। এ সময় পরপর তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে।
চকবাজার থানার উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাত ২টার দিকে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে আমরা শুনেছি। তবে আহতদের সংখ্যা আমাদের এখন পর্যন্ত জানা নেই। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মোজাম্মেল হক আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে এনিটভি অনলাইনকে বলেন, ‘হোসেনী দালানের সামনে বিস্ফোরণের ঘটনায় একজন মারা গেছে। আহত অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তবে ঠিক কতজন এখন পর্যন্ত ঢামেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তা জানতে আরো সময় লাগবে।’
এর আগে গতকাল রাতে শুধু ঢামেকেই ৪০ জনের বেশি রোগী যায় বলে জানিয়েছিলেন মোজাম্মেল হক।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘হোসেনী দালান এলাকায় কখনো এ রকম ঘটনা ঘটেনি। দুজন বিদেশিকে হত্যা করে যেমন অস্থিরতা সৃষ্টি করা হয়েছে, তেমনি বোমা মেরে অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। যেন দেশের মানুষ অস্বস্তিতে ভোগে।’
এ সময় যারাই এ কাজ করুক না কেন, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান হাজি সেলিম। পরে তিনি আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শেখ মারুফ হাসান বলেন, ‘আকস্মিকভাবে এ ঘটনা ঘটেছে। দেখছি কারা, কীভাবে, কেন করল। নিরাপত্তা ঘাটতি ছিল—এটা আমি বলব না। তবে অনেক সময় যারা ঘটনা ঘটায়, দুষ্কৃতকারীরা, তারা আসলে সুযোগের সন্ধানে থাকে।’
কারবালার প্রান্তরে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শহীদ হওয়ার দিনটিকে স্মরণ করতেই শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ ১০ মহররম তাজিয়া মিছিল করে। 'তাজিয়া' শব্দের অর্থও শোক বা সমবেদনা।