ইসি আপিল করলে সারা দেশে মামলা
বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে তিনি কমিশনের বিরুদ্ধে সারা দেশে মামলা করবেন।
আজ সোমবার বিকেলে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার যোকারচর বাজারে এক নির্বাচনী জনসভায় টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপনির্বাচনের প্রার্থী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী এই মন্তব্য করেন।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিরপেক্ষ রেফারির মতো। তাই আগামীকাল আপিল করলে তার নিরপেক্ষতা হারাবে। সে আর রেফারি থাকতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন আর নির্বাচন করতে পারবে না।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, ‘চাইর দিন ধইরা শুনতাছি কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়ন স্থগিত চাইয়া সুপ্রিম কোর্টে আপিল করছে (নির্বাচন কমিশন)। আইজকা এখন পর্যন্ত, এখন বাজে ৫টা ১৫/১৬ পর্যন্ত ওরা দরখাস্ত দেয় নাই। রেডিও, টিভিতে চালাইয়া যাইতাছে আপিল করতাছে। মানে পাবলিকরে ডর দেহাও। আমাগো পাবলিক ডরায় না। কিসের ডর। আগে বাদী কে হবে ওইডা ঠিক কইরা নেগা। ইলেকশন কমিশন, তুমি বাদী হইলে সারা বাংলাদেশ গিয়া তোমার নামে মামলা করব আমি। তুমি বাদী হবা কেন? কীভাবে হবা? জজকোর্টের কোনো মামলায় কেউ যদি হারে সে যদি হাইকোর্টে আপিল করতে যায় জজকোর্ট বাদী হয়? (দর্শক শ্রোতারা বলেন, না।) কে বাদী হয়? যাগোরে নিয়া মামলা সে বাদী হয়। কোর্ট কোনোদিন বাদী হয় না।’
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘তোমার কাছে ইলেকশন কমিশন, আমি গেছিলাম কোর্ট হিসাবে। তুমি বাদী হইলে তাহলে তুমি রেফারি হবা কেমনে? তুমি তো একপক্ষে। তোমার রেফারি বাদ। আরেকজন রেফারি রাখতে হবে নতুন। এই ইলেকশন কমিশন তাইলে এই নির্বাচন করতে পারবে না। তাই নির্বাচন কমিশন, তুমি যদি এই নির্বাচন করতে চাও, তাইলে তুমি কোনো মতেই বাদী হইতে পারবা না। বাদী কে হইব খুঁইজা বাইর করগা। আমি বুদ্ধি দিতে পারব না।’
আগামী ১০ নভেম্বর নির্বাচনে ভোট চুরির দুর্নাম ঘুচানোর সুযোগ এসেছে বলেও মন্তব্য করেন কাদের সিদ্দিকী।
ঋণখেলাপির অভিযোগে নির্বাচন কমিশন গত ১৩ অক্টোবর টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপনির্বাচনের প্রার্থী কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে। মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০ অক্টোবর আদালতে রিট করেন কাদের সিদ্দিকী। পরের দিন ২১ অক্টোবর কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে তা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি ইজারুল হক আকন্দের অবকাশকালীন বেঞ্চ। একইসঙ্গে কাদের সিদ্দিকীর মনোয়নপত্র কেন বৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিল কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করার কথা জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, আগামী ১০ নভেম্বর টাঙ্গাইল-৪ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন কাদের সিদ্দিকীর ভাই সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকী। নিউইয়র্কের এক অনুষ্ঠানে পবিত্র হজ, তাবলিগ জামাত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে মন্তব্য করায় সংসদ সদস্যপদ ছাড়তে হয় তাঁকে।