স্বাস্থ্যগত কারণেই অবসর, বললেন শমসের মবিন
পদত্যাগ ও রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী তাঁর এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণ জানালেন। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যগত কারণেই রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘সম্পূর্ণ শারীরিক কারণে আমি রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছি। আমি বাইরে যেতে পারি না, আমার চলাফেরার মধ্যে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ অবস্থায় রাজনীতি করতে হলে যে ধরনের শ্রম, সময় দেওয়া প্রয়োজন, সেটা আমার পক্ষে শারীরিক কারণে সম্ভব হচ্ছে না।’
বুধবার রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে পদত্যাগপত্রের চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন জানিয়ে শমসের মবিন বলেন, ‘আমি একটা চিঠি দিয়েছি বিএনপির চেয়ারপারসনের কাছে। গতকাল দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের মারফতে আমি এটা হস্তান্তর করেছি, গতকাল সন্ধ্যায় ওনার বাসায়। উনি প্রাপ্তি স্বীকার করেছেন। সেটার কপিও আছে আমার কাছে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করলে তিনি কী করবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। আমি রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছি, এখন থেকে অবসরেই থাকব। এটা তো সরকারি চাকরি নয়। স্বেচ্ছায় কেউ রাজনীতি করে এবং স্বেচ্ছায় মানুষ রাজনীতি থেকে অবসরও নেয়। এটা সরকারি চাকরি নয় যে কেউ গ্রহণ করতে পারবে, কেউ গ্রহণ করতে পারবে না। আমি স্বাস্থ্যগত কারণে অনতিবিলম্বে রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছি। আমার কথা হলো, এটা এখন থেকেই কার্যকর হবে।’
বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০১-২০০৫ সাল পর্যন্ত শমসের মবিন চৌধুরী ছিলেন পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্বে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দুই বছর চাকরি মেয়াদ শেষে করে ২০০৮ সালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বিএনপিতে যোগ দেন শমসের মবিন চৌধুরী। সে সময় চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পান তিনি। ২০০৯ সালে বিএনপির কাউন্সিল হলে শমসের মবিনকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়।
শমসের মবিন চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কোমরে গুলিবিদ্ধ হন। মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরবিক্রম খেতাব দেয়। এর আগে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মেজর পদ থেকে সরিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয় তাঁকে। পরে পররাষ্ট্র সচিব পদে উন্নীত হন এবং রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।