মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা : আজ সাক্ষ্য দিলেন হল পরিদর্শক
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের মামলায় আজ মঙ্গলবার সাক্ষ্য দিচ্ছেন ঘটনার দিন আলিম পরীক্ষার হল পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও স্থানীয় এক দোকানদার।
আজ মঙ্গলবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার শুনানির নবম দিনে হল পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন ও স্থানীয় দোকানদার জহিরুল ইসলাম সাক্ষ্য দেন। পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাঁদের জেরা করেন।
সাক্ষ্য শেষে বিচারক মো. মামুনুর রশীদ আগামীকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আদালত মুলতবি করেন। মামলার ১৬ আসামিকেই সকালে আদালতে হাজির করা হয়। শেষে তাঁদের আবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
পরে মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু গণমাধ্যমকে বলেন, আগামীকাল বুধবার মামলার দশম দিনে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার ও সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল খায়ের সাক্ষ্য দেবেন।
এ নিয়ে মামলার মোট ১১ জন সাক্ষ্য দিলেন। এর আগে গতকাল সোমবার সাক্ষ্য দিয়েছেন নুসরাতের ছোটভাই রাশেদুল হাসান রায়হান।
গত রোববার কেরোসিন বিক্রেতা লোকমান হোসেন লিটন, বোরকার দোকানের মালিক জসিম উদ্দিন ও তাঁর দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদ সাক্ষ্য দেন।
এর আগে আরো পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৭ জুন সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান, নুসরাতের বান্ধবী নিশাত ও সহপাঠী নাসরিন সুলতানা ফুর্তি।
এরপর ৪ জুলাই সাক্ষ্য দেন মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী মো. মোস্তফা। বিচারকের কাছে মোস্তফা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সেই দিনের কিছু সময়ের বর্ণনা দেন। তুলে ধরেন অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার অপকর্ম। বর্ণনা করেন মাদ্রাসার একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে সিরাজ-উদ-দৌলার আপত্তিকর দৃশ্যের।
এরপর ৫ জুলাই মামলার সাক্ষ্য দেন মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত পরীক্ষায় অংশ নিতে মাদ্রাসায় গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁকে ডেকে কৌশলে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। পরে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পাঁচ দিন পর ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের।
পরবর্তী সময়ে এ ঘটনায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
এ মামলায় পিবিআই ও পুলিশ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার দায় স্বীকারকারী পাঁচজনসহ মোট ১২ জন স্বীকারোক্তি দেন।
পরবর্তী সময়ে গত ২৯ মে নুসরাত হত্যা মামলার তদন্তকারী কমকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর শাহ আলম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে ১৬ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন। অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে এর বাইরে থাকা পাঁচ ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত।