চার কোপে দীপনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়
জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের মাথা ও ঘাড়ের সংযোগস্থলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে চারটি কোপ দেয় দুর্বৃত্তরা। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পর আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডা. কাজী মুহাম্মদ আবু শামা এ কথা জানান।
ডা. কাজী মুহাম্মদ আবু শামা বলেন, মাথা ও ঘাড়ে চারটি বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণের কারণে কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ওই চিকিৎসক বলেন, ‘ঘাড়ের পেছনের দিকে একটি বড় আঘাত করা হয়েছে, যেটি ছিল ১১ ইঞ্চি লম্বা, দুই ইঞ্চি চওড়া ও চার ইঞ্চি গভীর। এটি খুবই গুরুতর। ভারী ধারালো অস্ত্রের উপর্যুপরি কোপের মাধ্যমে একটি মারাত্মক গর্তের মতো করে মাথাটি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সেখানে মেরুদণ্ডসহ মাথায় রক্ত সরবরাহকারী ব্লাড ভেসেল (রক্তনালি) সবই কেটে যায়। মাথার সামনের দিকে আরেকটি কোপের চিহ্ন পাওয়া যায়। প্রত্যেক কোপেই হাড় কেটে যায়। এমনকি মাথার ভেতরে ব্রেন হেমারেজ (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ) পাই আমরা।’
এদিকে, দীপনের পরিবার জানিয়েছে, বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ গেটে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন হবে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতি প্রকাশনী সংস্থার কার্যালয়ে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন দীপন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক।
লালমাটিয়ায় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদুর রশীদ টুটুল, কবি তারেক রহিম এবং ব্লগার ও লেখক রণদীপম বসু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকার সি-ব্লকে শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে ঢুকে দুর্বৃত্তরা এ তিনজনকে কুপিয়ে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে ঢামেকে পাঠায়। এ দুই ঘটনার পর রাতে হামলার দায় স্বীকার করে টুইট করে আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা আনসার আল ইসলাম।