অসুস্থ খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে : ফখরুল
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের ক্রমান্বয়ে অবনতি হওয়ার পরও তাঁকে সুস্থ দেখিয়ে আবার কারাগারে পাঠানোর ‘ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।
আজ রোববার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া গত পাঁচ মাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (সাবেক পিজি) আছেন। কিন্তু তাঁর স্বাস্থ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি এখনো প্রচণ্ড অসুস্থ। তাঁর স্বাস্থ্যের ক্রমান্বয়ে অবনতি হচ্ছে। অথচ খালেদা জিয়া চেয়েছেন, নিজের পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু সরকার সেটা দিচ্ছে না।
‘পিজির ভিসি বলেছেন, খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে গেছেন, তাঁর রোগের উপশম হয়েছে। পিজির পরিচালকও একই কথা বলেছেন। আমরা মনে করি, এসব ষড়যন্ত্রের অংশ। তাঁকে আবারও অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে পাঠানোর জন্য এটা একটা চক্রান্ত। অথচ তাঁর পরিবার যখন গেছেন তখন দেখে আসছেন, তিনি এখনো উঠে বসতে পারেন না। তাঁকে দুজন ধরে ওঠাতে হয়। হুইলচেয়ারেও তিনি ঠিকভাবে বসতে পারেন না,’ যোগ করেন মির্জা ফখরুল।
সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মানববন্ধন হবে। একই দাবিতে ১২ সেপ্টেম্বর সারা দেশে মানববন্ধন করবে দলটি।
এ ছাড়া রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের শরিক পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের (পিপিবি) রিটা রহমানকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকার খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে। যিনি দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচারকে হটানোর জন্য রাজপথে আন্দোলন করেছেন।’
মূলত খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে তিলে তিলে শেষ করে দেওয়ার জন্য সরকার এ চক্রান্ত করছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা। তিনি আরো বলেন, ‘এ জন্য খালেদা জিয়াকে তাঁর প্রাপ্য চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। তিনি ডায়বেটিসে ভুগছেন গত ২০ বছর, হাইপার টেনশন আছে গত ১০ বছর ধরে, কিডনি সমস্যায় ভুগছেন গত এক বছরের বেশি সময়। তিনি যে মামলায় কারাগারে আছেন, এসব মামলায় অনেকেই জামিনে মুক্তি পান। কিন্তু খালেদা জিয়াকে সেটা দেওয়া হচ্ছে না।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে রেখে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার কারণ হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গায়েল করা। আমরা অবিলম্বে সরকারকে বলতে চাই, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার। অন্যথায় তাঁর স্বাস্থ্যের কোনো অবনতি হলে এর দায় সরকারকে নিতে হবে।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।