প্রতিক্রিয়া নিয়ে টিআইবি চিন্তিত নয় : সুলতানা কামাল
জাতীয় সংসদ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সংসদ সদস্যরা যে সমালোচনা করেছেন, প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন তা নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) চিন্তিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।
আজ শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার ধলেশ্বরে রাবিয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও তাদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টা।
গত ২৫ অক্টোবর টিআইবি বর্তমান সংসদের কার্যক্রমের ওপর পরিচালিত তাদের গবেষণামূলক প্রতিবেদন ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ প্রকাশ করে। এতে বর্তমান সংসদকে ‘পুতুলনাচের নাট্যশালা’ বলে উল্লেখ করে টিআইবি। সংসদের বিরোধী দলকে ‘তথাকথিত’ বলে উল্লেখ করা হয়।
গত ১০ নভেম্বর জাতীয় সংসদ ভবনে দশম সংসদের অষ্টম অধিবেশনের পয়েন্ট অব অর্ডারে টিআইবির এ প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করেন সংসদ সদস্যরা। আলোচনায় অংশ নিয়ে টিআইবিকে বিশেষ অধিকার কমিটিতে হাজির করার দাবি করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সংসদ নিয়ে করা সব মন্তব্য প্রত্যাহার করতে টিআইবিকে তিনদিনের সময় বেঁধে দেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এ ছাড়া টিআইবিকে আর কখনো সংবিধান ও পার্লামেন্ট সম্পর্কে কথা না বলার অঙ্গীকার করতে বলেন তিনি।
সাংবাদিকরা আজ এসব বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমরা যখনই কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করি সে প্রতিবেদন নিয়ে কারো না কারোর আপত্তি থাকে, প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। এ নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। টিআইবি যত বাধাই আসুক না কেন- জাতির স্বার্থে, দেশের স্বার্থে জনগণের প্রতিষ্ঠানগুলো যেন নিজেদের সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে সে জন্যই টিআইবি সঠিক তথ্য তুলে ধরবে।’
বাংলাদেশ আজ সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত উল্লেখ করে সুলতানা কামাল আরো বলেন, ‘এ বিষয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তারপরেও বিশ্ব দরবারে আমাদের বারবার জবাবদিহি করতে হচ্ছে, কেন দেশে যৌন হয়রানি বাড়ছে, বাল্যবিয়ে বাড়ছে, কেন মেয়েরা স্কুল থেকে ঝরে পড়ছে। এসব চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।’
এজন্য গ্রামে-গঞ্জে পাঠাগার স্থাপন একটা ভালো উদ্যোগ। পাঠাগার থেকে শিক্ষার্থীরা রক্ষণশীলতা দূরীকরণের উপাদান খুঁজে পায় বলেও মন্তব্য করেন সুলতানা কামাল।
রাবিয়া খাতুন স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকসির এম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, জেলা রেজিস্ট্রার মো. মাহফুজুর রহমান খান, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, পাঠাগারের সম্পাদক শওকত চৌধুরী, দীপক চৌধুরী বাপ্পী, সীমান্ত মাদার্স ক্লাবের সভাপতি ডা. জেসমিন আহমেদ।