রায়ের পর কাঠগড়ায় কান্নায় ভেঙে পড়ে খুনিরা
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। মাদ্রাসা অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ডসহ এক লাখ টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের রায় শুনে কাঠগড়ায় থাকা খুনিরা কান্নায় ভেঙে পড়ে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১১টার দিকে ফেনীর আদালতে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি প্রিজনভ্যানে করে আসামিদের কারাগার থেকে বের করা হয়। ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে তাদের আদালত চত্বরে নিয়ে আসা হয়। প্রিজনভ্যানটিকে মাঝখানে রেখে দুই পাশে ছিল পুলিশের গাড়ি। তারপর হাতকড়া পরা অবস্থায় সারিবদ্ধভাবে সবাইকে প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। কাঠগড়ায় আসামিদের উদ্বিগ্ন দেখা যাচ্ছিল। কামরুন নাহার মনি তার সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়েই কাঠগড়ায় উপস্থিত হয়। সে সময় আসামিরা দোয়া পড়ছিল।
মামলার রায় শুনতে আদালতে নুসরাতের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও মামলার আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী ও আসামিদের স্বজনরাও হাজির হন। আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও ভিড় করে উৎসুক মানুষ।
আজ বৃহস্পতিবার নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর কাঠগড়ায় থাকা আসামিরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। আদালত থেকে বেরিয়ে কাঁদতে কাঁদতে প্রিজন ভ্যানে উঠেন মামলার আট নম্বর আসামি মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আফছার উদ্দিন। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম
মামলার আসামিরা
এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ১৬ জন। তাঁরা হলেন প্রধান আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ-উদ-দৌলা, দুই নম্বর আসামি ফেনী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. নুর উদ্দিন, তিন নম্বর আসামি মাদ্রাসার ফাজিলের ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম, চার নম্বর আসামি পৌর আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, পাঁচ নম্বর আসামি ছাত্রলীগকর্মী ও মাদ্রাসার ফাজিল বিভাগের ছাত্র মো. জোবায়ের, ছয় নম্বর আসামি চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ও মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী জাবেদ হোসেন, সাত নম্বর মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক এবং ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হাফেজ আবদুল কাদের, আট নম্বর আসামি মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফছার উদ্দিন।
ক্রমানুসারে অন্য আসামিরা হলেন মাদ্রাসার ফাজিল প্রথম বর্ষ ও ফেনী পলিটেকনিক কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের সদস্য ও ছাত্রলীগকর্মী মো. শামীম, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলন সদস্য ও ফেনী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এমরান হোসেন মামুন, মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ইফতেখার উদ্দিন রানা, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের সদস্য ও ছাত্রদলকর্মী হিসেবে পরিচিত মহিউদ্দিন শাকিল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন, মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী উম্মে সুলতানা পপি, মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী কামরুন নাহার মণি।