নুসরাত হত্যার রায় একটি মাইলফলক : অ্যাটর্নি জেনারেল
বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় সব আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেছেন, ‘নিম্ন আদালতের এ রায় একটি মাইলফলক। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করার জন্য হাইকোর্টে আপিল ও ডেথ রেফারেন্স দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে নুসরাত হত্যা মামলার রায়ের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল এসব কথা বলেন।
এর আগে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বহুল আলোচিত নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার ১৬ আসামির প্রত্যেকের ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এই রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া সব আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি হলেন—সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আবদুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মণি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আবদুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।
নুসরাতকে হত্যার পর প্রায় সাত মাসের মধ্যে বিচারকাজ শেষ হলো। এখন আসামিদের মৃত্যু অনুমোদনের জন্য মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে পাঠাবেন নিম্ন আদালত।
নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। পরে ৬ এপ্রিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা পরীক্ষা কেন্দ্রের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তাঁর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে মৃত্যুশয্যায় বলে গেছেন নুসরাত। টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে তিনি মারা যান।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় ৮ এপ্রিল নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।