আপিলের সময়সীমা ৭ দিন, নইলে ফাঁসি কার্যকর
নুসরাত জাহান রাফি হত্যামামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আপিল করার জন্য সাত দিন সময় পাবে। অন্যথায় হাইকোর্টের অনুমোদন সাপেক্ষে ডেথ রেফারেন্স শুনানি শেষে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে পারবেন ফেনী জেলা প্রশাসক।
আজ বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক মামুনুর রশিদ ওই আদেশ দেন। হত্যা মামলায় ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রায়ের শেষ অংশে বিচারক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে দণ্ডিত করে প্রত্যেককে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য আদেশ দেওয়া হলো।’ এ ছাড়া প্রত্যেক আাসামির কাছ থেকে এক লাখ টাকা করে আদায় করে নুসরাতের পরিবারকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। ফাঁসির রায় কার্যকর করার জন্য এবং আদায়কৃত টাকা নুসরাতের পরিবারকে প্রদান করতে ফেনীর জেলা প্রশাসককে বলা হয়েছে।
রায়ে বলা হয়, ‘ওই মামলায় জব্দকৃত আলামত গ্লাস, বোরকা, ওড়না, সেলোয়ার পোড়া অংশ, ওড়নার পোড়া অংশ, ম্যাচের কাঠি, মোবাইল, সিডি, নেভি ব্লু কালারের একজোড়া জুতা, কেরোসিন মিশ্রিত পলিথিন, ড্রাম, ভিকটিমের লেখা খাতা ও পরীক্ষার খাতা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হলো।’
রায়ে আরো বলা হয়, ‘মৃত্যুদণ্ড সদয় অনুমোদনের জন্য অত্র মামলার যাবতীয় কার্যক্রম হাইকোর্ট বিভাগে সত্বর প্রেরণ করা হোক।’ রায়ে আরো বলা হয়, আসামিরা চাইলে সাত কার্য দিবসের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল করতে পারবে।
এ মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ১৬ জন। তাঁরা হলেন প্রধান আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ-উদ-দৌলা, দুই নম্বর আসামি ফেনী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. নুর উদ্দিন, তিন নম্বর আসামি মাদ্রাসার ফাজিলের ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম, চার নম্বর আসামি পৌর আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, পাঁচ নম্বর আসামি ছাত্রলীগকর্মী ও মাদ্রাসার ফাজিল শ্রেণির ছাত্র মো. জোবায়ের, ছয় নম্বর আসামি চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ও মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী জাবেদ হোসেন, সাত নম্বর মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক এবং ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হাফেজ আবদুল কাদের, আট নম্বর আসামি মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আফছার উদ্দিন।
ক্রমানুসারে অন্য আসামিরা হলেন মাদ্রাসার ফাজিল প্রথম বর্ষ ও ফেনী পলিটেকনিক কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের সদস্য ও ছাত্রলীগকর্মী মো. শামীম, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলন সদস্য ও ফেনী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এমরান হোসেন মামুন, মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ইফতেখার উদ্দিন রানা, অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা মুক্তি পরিষদ আন্দোলনের সদস্য ও ছাত্রদলকর্মী হিসেবে পরিচিত মহিউদ্দিন শাকিল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিন, মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী উম্মে সুলতানা পপি, মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী কামরুন নাহার মণি।