রানা প্লাজা ধস : পলাতকদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা
বহুল আলোচিত রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হত্যা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার বিচারিক হাকিম আল-আমিন এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আনোয়ারুল কবির বাবুল এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।
বাবুল জানিয়েছেন, বিচারক অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দাখিল করা অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পলাতক ২৪ জনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৭ জানুয়ারি পরোয়ানা-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছরের ১ জুন ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। সাক্ষী করা হয়েছিল ৫৯৪ জনকে।
অভিযোগপত্রের আসামিরা হলেন- ভবন মালিক সোহেল রানা, তাঁর বাবা আব্দুল খালেক ওরফে কুলু খালেক ও মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার বরখাস্ত হওয়া মেয়র আলহাজ রেফাত উল্লাহ, কাউন্সিলর মোহাম্মাদ আলী খান, প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, পোশাক কারখানা নিউওয়েভ বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েভ স্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সারোয়ার কামাল, আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. মধু, অনিল দাস, মো. শাহ আলম ওরফে মিঠু, মো. আবুল হাসান, সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সাবেক উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. আব্দুস সামাদ, উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. জামশেদুর রহমান, উপ-প্রধান পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, পরিদর্শক প্রকৌশল মো. ইউসুফ আলী, মো. শহিদুল ইসলাম, ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেন, ইথার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. শফিকুল ইসলাম ভূইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, মো. আতাউর রহমান, মো. আব্দুস সালাম, বিদ্যুৎ মিয়া, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনি, রেজাউল ইসলাম, নান্টু কন্ট্রাকটার, মো. আব্দুল হামিদ, আব্দুল মজিদ, মো. আমিনুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, মো. ইউসুফ আলী ও মাহবুবুল আলম।
আসামিদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন সোহেল রানা। জামিনে রয়েছেন ১৬ জন এবং ২৪ জন পলাতক।
রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় সাভার থানায় আলাদা দুটি মামলা করা হয়। অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত করে পুলিশের একটি হত্যা মামলা, অন্য মামলাটি ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ইমারত আইনে দায়ের করে।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। এ সময় ভবনের নিচে চাপা পড়েন সাড়ে পাঁচ হাজার পোশাক শ্রমিক। এ ঘটনায় এক হাজার ১৩৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার শ্রমিক।