শিশুকে তার মতো করে বড় হতে দিতে হবে : সংস্কৃতিমন্ত্রী
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, ‘আমরা এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই, যে দেশে ধর্মের নামে কোনো হানাহানি হবে না, মানুষ হত্যা করা হবে না, যে দেশে শান্তিপূর্ণভাবে সব ধর্মের মানুষ বসবাস করবে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ‘ভিশন-২০২১’-এর উদ্যোগে ছড়া ও কবিতা লিখন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় নির্বাচিত ছড়া ও কবিতা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, যে দেশে শান্তিপূর্ণভাবে সবাই লেখাপড়া করবে, সবাই উন্নত সুন্দর জীবনযাপন করবে। শুধু আর্থিক সচ্ছলতার জীবন নয়, সেখানে নাটক থাকবে, কবিতা থাকবে, খেলাধুলা থাকবে, যে যার ধর্ম সুন্দরভাবে পালন করবে। আমরা সবাই মিলে একটা চমৎকার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।
শিশুদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এই বাংলাদেশের তোমরা আগামী দিনের সৈনিক। তোমরা নিজেদের গড়ে তোলো, তোমাদের সঙ্গে আমরা আছি।’
এ সময় অভিভাবকদের উদ্দেশে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, ‘শিশু যেটা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, সেটা তার মতো করতে দিতে হবে। তাকে তার মতো করে বড় হতে দিতে হবে।’
‘ভিশন-২০২১ নীলফামারী’-এর প্রধান সমন্বয়ক মো. ওয়াদুদ রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছড়াকার নূর মোহাম্মদ তালুকদার, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, প্রথম আলোর প্রথমা প্রকাশনের পাণ্ডুলিপি সম্পাদক আখতার হুসেন, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আসলাম সানী, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির প্রকাশনা বিভাগের কর্মসূচি কর্মকর্তা (প্রোগ্রাম অফিসার) সুজন বড়ুয়া, নীলফামারী পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, জেলা পরিষদের প্রশাসক মমতাজুল হক প্রমুখ।
পরে ‘ভিশন-২০২১ নীলফামারী’-এর সংগৃহীত ১৬ হাজার কবিতা থেকে বাছাই করা ১৯৮টি কবিতাসংবলিত ‘আমার দেশ আমার মাটি’ নামে একটি কবিতা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। পরে সেখানে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
কথাসাহিত্যিক অনিসুল হক বলেন, ‘নীলফামারীর কথা আমি গৌরবের সঙ্গে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে প্রচার করতে পারব, সেই পত্রিকার নাম কিশোর আলো। সেই পত্রিকায় আমি লিখতে চাই। পৃথিবীতে একটা শহর আছে, সে শহরে একটা কবিতা লেখার প্রতিযোগিতায় ১৬ হাজার ছেলেমেয়ে অংশগ্রহণ করেছে। আমার ধারণা, এটা একটা বিশ্বরেকর্ড, এই বিশ্বরেকর্ডের আমি সাক্ষী। আর সেটা ঘটল নীলফামারীতে। আর এটা কেনই বা ঘটবে না? কারণ আমি নীলফামারীতে জন্মগ্রহণ করেছি।’
‘ভিশন-২০২১ নীলফামারী’-এর প্রধান সমন্বয়ক ওয়াদুদ রহমান জানান, এই আয়োজনে নীলফামারী জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রথম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৬ হাজার কবিতা জমা পড়ে। সেখান থেকে এক হাজার ছয়শ কবিতা বাছাই করা হয়। এর মধ্যে ১৯৮টি কবিতা দিয়ে বই প্রকাশ করা হয়। ওই ১৯৮ শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়।
শহীদ মিনার চত্বরে বিকেল ৩টার দিকে অনুষ্ঠান শুরু হলেও দুপুর ২টার আগেই প্রায় ১০ হাজার ধারণক্ষমতার ওই শহীদ মিনার চত্বর নারী-পুরুষ-শিশুদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরা সমাগম চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।