হরতালে পেছাল এসএসসি পরীক্ষা
পিছিয়ে দেওয়া হলো এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। আগামীকাল সোমবার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ২০ দলের ডাকা হরতালের কারণে তা শুরু হচ্ছে বুধবার। সোমবারের পরীক্ষাটি নেওয়া হবে শুক্রবার সকাল ৯টায়। আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, হরতালের কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবরোধের কারণে পরীক্ষা স্থগিত বা পেছানোর ভাবনা নেই।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হরতাল-অবরোধে পরীক্ষা চালিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দেওয়ার বলে আশ্বস্ত করেছে। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সব ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি দেশে একটি অস্বাভাবিক-অমানবিক অবস্থা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় আমরা শিক্ষার্থীদের বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারি না।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশ্বাসের বিষয়ে ইঙ্গিত করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে কথা বলার সময় অনেক বড় বড় কথাই বলেন, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বিপদে পড়লে কেউ আর তখন দায় দায়িত্ব নেবেন না। এ জন্য আমরা পরীক্ষা পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
হরতাল-অবরোধে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে, এ জন্য জাতিকে ৩০ বছর ভুগতে হবে মন্তব্য করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আমরা এই পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে করজোড়ে বারবার অনুরোধ করেছি, আবেদন করেছি। কিন্তু আমরা হতাশ হয়েছি। আমাদের অনুরোধে কেউ সাড়া দেয়নি। উপরন্তু আমরা বিএনপির একজন নেতার মুখে শুনেছি, জনগণের অধিকার আগে, দেশে জনগণ বেঁচে থাকলে পরীক্ষা পরেও নেওয়া যাবে।’
প্রসঙ্গত, গতকাল রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘আগে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা। পরীক্ষা পিছিয়ে দিলে কিছুই হবে না। জনগণ বেঁচে থাকলে পরীক্ষা পরেও নেওয়া যাবে।’
সাংবাদিকরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চান, সেই ১৯৯৫-৯৬ সাল থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির খেসারত দিচ্ছে দেশের শিক্ষার্থীরা। এর কোনো স্থায়ী সমাধান হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী মনে করেন কি না। এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতি বুঝি না। আমি রাজনীতির মারপ্যাঁচে থাকতে চাই না। তবে আমি নাম উল্লেখ করে বলতে চাই, এর স্থায়ী সমাধানের জন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ সকল রাজনৈতিক দলেরই দায়িত্ব রয়েছে। সকলের কাছে আমার আবেদন অন্ততপক্ষে শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে একটি সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টি করুন।’