জুনের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম সিটিতে নির্বাচন : সিইসি
চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ। আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচনপূর্ব পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
এ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে কি না, তা ওই মুহূর্তের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওনারা সবাই বলেছেন যে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে, গত কয়েক দিনে বেশকিছু উন্নতি হয়েছে। এবং ওনারা আশা করছেন ভবিষ্যতে এই উন্নতির ধারা বলবৎ থাকবে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। নির্বাচন করার জন্য কোনো বাধা কিংবা কোনো অস্থিরতা ওনারা মনে করছেন না যে বিদ্যমান থাকবে। ওনারা এশিওর করেছেন যে এই সময়ে আমরা নির্বাচন করে নিতে পারি। ওনাদের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা নেই।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নির্বাচন বিষয়ে কথা হয়েছে জানিয়ে কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য আমরা গ্যাপ খুঁজছিলাম। আগেই আপনাদের বলেছি। সে জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তারা বলছেন যে এখন যেভাবে চলছে, হরতাল হলে ওনারা রিস্ক নিচ্ছেন না। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দেয়। এবং তাদের একটা মানসিক চাপ থাকে। সে জন্য তারা হরতাল থাকলে শুক্র-শনিবার পরীক্ষা নিচ্ছে। তো এ রকম পরিস্থিতি চললে পরে আমরা শুক্র শনিবার অ্যাভয়েড করব। ওনাদের শুক্র-শনিবার ছেড়ে দেব। আর ওনারা আমাদের অন্য দিকের, আমার অ্যাকচুয়ালি অলমোস্ট ফোর-ফাইভ ডেজ (দিন) লাগে। পাঁচদিন হলে পরে কমফোর্টেবলি হয়। অবশ্য সব কেন্দ্রে ওনাদের পরীক্ষা হবে না। কলেজ-টলেজ বড় বড় কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষা হয়। আমাদের কেন্দ্র অতটা এফেক্ট করবে না। কিন্তু পরীক্ষা তো হলে পরে আমাদের সমস্যা। সেজন্য আমরা গ্যাপ চেয়েছি। ওনারা বলছেন যে পরিস্থিতি বিবেচনা করে ওনারা এই গ্যাপের ব্যবস্থা করে দেবেন। এমনিতেও তো শিডিউল মোতাবেক ওনারা পরীক্ষা নিতে পারছেন না। ওনাদের চেঞ্জ করতে হচ্ছে। এবং তারা নরমাল পরীক্ষাগুলোর ডেট চেঞ্জ করে শুক্র-শনিবার নিয়ে আসছেন। তো ওনারা বলেছেন শুক্র-শনিবারটা ওনাদেরকে ছেড়ে দিতে। আমরা সেটা মনে করছি শুক্র-শনিবারে ওনারা পরীক্ষা করুক। বাকি দিনের মধ্যে সুইটেবলি আমরা ম্যাচ করে নেব।’
সিইসি আরো বলেন, ‘আমাদের পাঁচদিন লাগে এই জন্য যে নির্বাচনী কর্মকর্তারাও কিন্তু শিক্ষক। তাদের ট্রেনিং দেওয়ার জন্য আমার কিছুটা সময় লাগে।...আর চারদিন সময় হলে সবচেয়ে ভালো। ভোটকেন্দ্রটা আগের দুদিন হলে আমাদের সুবিধা। চেয়ার-টেবিল সরানো লাগে। আমাদের কিছুটা প্রিপারেশন লাগে, আমরা তো আগের দিন দিন থেকেই ওখানে মোবিলাইজড করে ফেলি। সে জন্য আমাদের একটু সময় লাগে। সেটা তাদের বলা হয়েছে। তারা এভাবে এক্সারসাইজ করছেন। তারা আমাদের জানাবেন।’
নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘তারা বলছেন যে তাদের পরীক্ষা ১ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে পুরোটাই তাদের জন্য সম্ভব। আমরা যদি এপ্রিল মাসের ১ তারিখের পরে করতে চাই ১ থেকে ৬ তারিখও গ্যাপ আছে। আমরা করতে পারি। আবার জুন মাসের ১১ তারিখেও যদি করতে চাই তাহলেও ওখানে ও রকম গ্যাপ আছে। অলরেডি এ রকম একজিস্টিং গ্যাপ আছে। তবে আমরা তো হুট করে করতে পারি না। আমাদের তো একটা সময় লাগে। আপনারা জানেন আমাদের মিনিমাম থার্টি সেভেন থার্টি সিক্স এ রকম দিনের থেকে ওদিকে ৪০ দিন হলে আমরা কমফর্টেবলি করতে পারি।’
সে ক্ষেত্রে কবে নাগাদ তফসিল ঘোষণা করা হবে তা জানতে চাইলে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনে বসে এগুলো সব চিন্তাভাবনা করে এই গ্যাপগুলি দেখে কোনটা কখন ঠিক হয় দেখে শুনে তফসিল ঘোষণা করব।’
পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং সবার অংশগ্রহণে ভালো নির্বাচন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ।