‘শিগগিরই সাত খুন ও ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র’
আলোচিত সাত খুন ও ত্বকী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র শিগগিরই দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। একই সঙ্গে সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নুর হোসেনকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি। আজ রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় নৌবাহিনী পরিচালিত ডকইয়ার্ড ও ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বন্দর থানার সোনাকান্দায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে দুটি টহল নৌযান হস্তান্তর করেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল এম মকবুল হোসেন, সহকারী নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল সৈয়দ আবু মনসুর আরসাদুল আবেদীন, ডকইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর এম খুরশিদ মালিক, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিয়া, পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মুহিদ উদ্দিন প্রমুখ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দুটি মার্ডার কেসের কথা বললেন। প্রথম হলো ত্বকী হত্যা। এটা অধিকতর ও আরো স্বচ্ছ তদন্তের জন্য র্যাবকে দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করছি তারা এই তদন্ত রিপোর্ট বা চার্জশিট যেটাই বলেন খুব শিগগিরই তারা প্রদান করবে এবং এটার সঙ্গে যাঁরা যাঁরা এখানে ছিলেন তাঁদের মুখোশ উন্মোচিত হবে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে আপনাদের সম্মুখে আমরা উপস্থাপন করতে পারব চার্জশিটের মাধ্যমে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেভেন মার্ডার, এটা শুধু নারায়ণগঞ্জবাসীকে না, সারা বাংলাদেশের মানুষকেই আলোড়িত করেছে।...এই মার্ডার যাঁরা করেছেন, তাঁরা চিহ্নিত হয়েছে। আমরা খুব শিগগিরই এর চার্জশিট দিতে যাচ্ছি।’
এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি ভারতের কারাগারে আটক নুর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘আপনারা জানেন নুর হোসেন পালিয়ে চলে গিয়েছিল ভারতে। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। তারা তাকে ফেরত দেওয়ার জন্য সম্মতি প্রকাশ করেছে, আমাদের লিখেছে। আমাদেরও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। আমরা যে কোনো সময় তাকে নিয়ে আসব।’
২০১৩ সালের ৬ মার্চ সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী পাঠাগার থেকে বাসায় ফেরার পথে অপহৃত হয়। ৮ মার্চ সকালে শীতলক্ষ্যার শাখা নদী থেকে পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। গত দুই বছরে এ হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করতে পারেনি মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব। ফলে বিচারকাজও শুরু হয়নি। গত ৬ মার্চ র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, সম্পূর্ণ তদন্ত শেষ করার পরেই চার্জশিট দাখিল করা হবে।
গত বছর ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তাঁর বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও পরদিন আরেকজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলার প্রধান আসামি নুর হোসেনসহ তিনজনকে গত বছর ১৪ জুন রাতে কলকাতার কৈখালী থেকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগর পুলিশের বিশেষ বাহিনী। এরপর গত ১৩ মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার আদালতে তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।