বিচারপতি নজরুলকে সরে দাঁড়াতে চাপ দেওয়া হয়নি
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে মীর কাসেম আলীর মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হয়নি।
আজ সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মীর কাসেম আলীর মামলা থেকে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। তবে তাঁকে মামলা থেকে সরে দাঁড়াতে কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ ও বৈরী পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়নি।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন প্রয়োজন কি না, বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি নজরুলের প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন করা হলে মাহবুবে আলম বলেন, ‘দুই চৌধুরীকে এক করে দেখলে চলবে না। একজন প্রেস কনফারেন্স করে কথা বলেছেন। কিন্তু বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী তা করেননি।’
এর আগে মীর কাসেমের আপিল শুনানি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে বিচারপতি নজরুল বলেন, ‘প্রচণ্ড বৈলী পরিবেশের কারণে আমি মীর কাসেমের মামলার কার্যক্রম থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি এই মামলায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং আইনজীবী হিসেবে এটা করার আমার অধিকার রয়েছে। এটা অসাংবিধানিক নয় কিংবা অনৈতিকও নয়।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ইতিমধ্যেই অন্তত দুটি মামলায় এই মক্কেলের পক্ষে ও তিনটি মামলায় অপর পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছি। উক্ত মামলাগুলোর শুনানি চলাকালে বিজ্ঞ অ্যাটর্নি জেনারেল আমার প্র্যাকটিসের বৈধতা বা নৈতিকতা নিয়ে কোনো আপত্তি উত্থাপন করেননি। কিন্তু শুধু মীর কাসেম আলীর মামলা পরিচালনা করতে গেলেই তিনি আমার প্র্যাকটিসের বৈধতা ও নৈতিকতার প্রশ্ন তুললেন যা অনাকাঙ্ক্ষিত। আইন ও সংবিধান সম্মতভাবে আমি মীর কাসেম আলী সাহেবের আপিলে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু প্রচণ্ড বৈরী পরিবেশের কারণে আমি এই মামলার কার্যক্রম থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হচ্ছি।’
গত ১০ ফেব্রুয়ারি মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানিতে অংশ নেন সদ্য অবসরে যাওয়া হাইকোর্টের বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
এ নিয়ে পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তাঁর নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা অবস্থায় মানবতাবিরোধীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়ায় বিচারপতি নজরুলের সমালোচনা করেন।