৩৬ গ্রাহকের ২০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা নেই
বিভিন্ন ব্যাংকের অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) বুথে যন্ত্র বসিয়ে কার্ড (ক্লোন) জালিয়াতির মাধ্যমে চার ব্যাংকের ৩৬ গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব গ্রাহকের হিসাব থেকে মোট জালিয়াতি হয়েছে ২০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
আগামী সপ্তাহেই জালিয়াতির শিকার হওয়া গ্রাহকরা টাকা ফিরে পাচ্ছেন। এর মধ্যে ইস্টার্ন ব্যাংকের গ্রাহকরা টাকা পেয়ে যাবেন আগামীকাল বৃহস্পতিবার।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা এ তথ্য জানান। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্ড ও ডেলিভারি বিভাগ প্রধানদের সাথে সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনার বিষয়ে আলোচনা করেন।
শুভঙ্কর সাহা সাংবাদিকদের বলেন,‘বুধবার বিকেল পর্যন্ত সবশেষ তথ্য অনুযায়ী চারটি ব্যাংকের ৩৬টি এটিএম কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে ২০ লাখ ৫৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জালিয়াত চক্র। ব্যাংকগুলো হলো- ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), সিটি ব্যাংক লিমিটেড, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড।’
শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের তড়িৎ সিদ্ধান্তে জালিয়াতির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। দেশে সাড়ে সাত হাজার এটিএম বুথ ও ৯০ লাখ এটিএম কার্ড আছে। ক্লোনিং ডিভাইস লাগানোর পর প্রায় এক হাজার ২০০ কার্ড ব্যবহৃত হয়েছে। সে কার্ডগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে নতুন কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ এ সময় ব্যবহার করা কার্ডের তথ্য চক্রের হাতে থাকতে পারে।’
শুভঙ্কর আরো বলেন, ‘যে ৩৬ জন গ্রাহকের টাকা জালিয়াতি হয়েছে তাঁদের প্রত্যেকের টাকা আগামী সপ্তাহে নিজ নিজ ব্যাংক ফেরত দিবে। ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংককে এ ব্যাপারে আশ্বস্থ করেছে। এর মধ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ইস্টার্ন ব্যাংক তাঁদের ২৪ জন গ্রাহকের ১৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ফেরত দেবে।’
শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘আজকের সভায় ভবিষ্যতে এ ধরনের অপতৎপরতা রোধে ব্যাংকগুলোর সাথে সম্পর্ক বাড়ানো এবং গ্রাহকদের সচেতনতা বাড়াতে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমনকি এটিএম বুথে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকারীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিছু ব্যাংকের টাকা তোলার পর গ্রাহকের কাছে খুদে বার্তা যায়, অনেকের যায় না। খরচের বিষয় থাকায় গ্রাহকদের সাথে আলোচনা করে প্রত্যেককে বার্তা প্রেরণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এমনকি অ্যালার্মের ব্যবস্থা নিয়েও চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিদিন লেনদেনের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট টাকা উত্তোলনের সীমা করা যায় কি না তার পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।’
শুভঙ্কর আরো বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন এখনো হাতে আসেনি।’ তদন্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যাংকের কর্মকর্তা এ ঘটনার সাথে জড়িত এমন কোনো তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আসেনি।’ তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় না বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চারটি ব্যাংকের মধ্যে সিটি ব্যাংকের চারটি হিসাব থেকে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংকের ২৪টি হিসাব ১৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি হিসাব থেকে ৪০ হাজার টাকা এবং ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের একটি হিসাব থেকে এক লাখ ২৬ হাজার টাকা জালিয়াতি হয়েছে।