পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত সুন্দরবন
পর্যটকদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, হিরণ পয়েন্ট, দুবলারচর, হাড়বাড়িয়া ও করমজলসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটগুলো। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির সাথে রবিবারের আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটি মিলিয়ে ৩ দিনের সরকারী ছুটি কাটাতে সুন্দরবনের নানা দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণে আসতে শুরু করেছে দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা। বন বিভাগ জানিয়েছে, পর্যটকদের এ ভিড় আরো কয়েক দিন পর্যন্ত থাকবে।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত কয়েক হাজার পর্যটক করমজল পর্যটন কেন্দ্রে এসেছেন। এছাড়া বনের গহীনে হাড়বাড়িয়া, হিরণ পয়েন্ট, কটকা, কচিখালী, দুবলাচর, হিরণ পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্পটেও প্রচুর দর্শনার্থী ভ্রমণ করছেন। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বল্প সংখ্যক বন বিভাগের কর্মচারীকে। এরপরও পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিরলস কাজ করছেন তাঁরা। তিনি আরো জানান, পর্যটকদের এ ভিড় আরো কয়েক দিন পর্যন্ত থাকবে।
দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে আসা পর্যটকরা সাধারণত মংলা হয়েই বনে প্রবেশ করে থাকেন। আর মংলা থেকে সবচেয়ে কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান হলো সুন্দরবনের করমজল ও হারবাড়িয়া। যারা বেশি খরচ করে বনের গহিনে যেতে পারেন না তাঁরা অল্প খরচেই করমজল ও হারবাড়িয়া ঘুরে দেখেন।
করমজলে রয়েছে দেশের একমাত্র লবণ পানির কুমিরের প্রজনন কেন্দ্র। সম্প্রতি সেখানে গড়ে উঠেছে কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র। এ ছাড়া আছে কৃত্রিম পদ্ধতিতে তৈরি হরিণ ও বানরের আবাসস্থল, ওয়াচ টাওয়ার, ফুট টেইলারসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থাপনা। এ ছাড়া বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-পালা, পশু-পাখি, বন্য প্রাণী দেখে দর্শনার্থীরা তৃপ্তি মিটিয়ে থাকেন। করমজল ও হারবাড়িয়া যাওয়ার মধ্যে পশুর চ্যানেলে অবস্থানরত বড় বড় বিদেশী জাহাজের অবস্থান পর্যটকদের বাড়তি তৃপ্তি দেয়।
মংলার পর্যটন ব্যবসায়ী দ্য সাউদার্ন ট্যুরসের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, ‘ বছরের এই সময়ে পর্যটকদের আগমন খুব বেশি। এতে আমরা যাঁরা ব্যবসায়ী আছি তাঁদের আয়ও হচ্ছে। আমরা চাই সারা বছর ধরেই যেন এই অবস্থা থাকে।’ মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘যাঁরা সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন, তাঁদের জন্য বন বিভাগের কাছ থেকে পাস নিতে বাগেরহাটে যেতে হয়। এতে যেমন সময় নষ্ট হয় তেমনি দর্শনার্থীরা ভোগান্তির শিকার হন। তাই আমাদের পর্যটন ব্যবসায়ীদের দাবি, যদি মংলা থেকে এই পাস দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে আমরাও উপকৃত হব এবং দর্শনার্থীরা ভোগান্তির হাত থেকে রেহাই পাবেন।’
এদিকে মংলার বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল পর্যটকের ভিড়ে ঠাসা। শহরের আবাসিক হোটেল ‘বন্দর’ এর মালিক শাহানুর টিংকু জানান, এমননিতেই এখন পর্যটন মৌসুম। তার উপর একসাথে তিন দিনের টানা সরকারী ছুটি কাটাতে শুক্রবার থেকেই হোটেলের কোন কক্ষই খালি থাকছে না। রুম ফাঁকা না থাকায় অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।