৪ শিশু হত্যায় জড়িত অন্তত ৮ জন!
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামে চার শিশু হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামি আরজু ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ বুধবার বিকেলে হবিগঞ্জের বিচারিক হাকিম মো. কাউছার আলমের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আরজু হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে নতুন তথ্য দেন।
গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সূত্র জানায়, আসামি আরজু জিজ্ঞাসাবাদে তাদের জানিয়েছে, সুন্দ্রাটিকি গ্রামের ‘বাগাল পঞ্চায়েতের’ প্রধান আব্দুল আলী বাগালের আনারস বাগানে বসে ৪ শিশুকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে যাবতীয় অর্থের জোগান দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন আসামি আব্দুল আলী। এই পরিকল্পনা মোতাবেক ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় শিশুদের কৌশলে অপহরণ করে আনারস বাগানে নিয়ে ওই দিনই রাতে হত্যা করা হয়। পরে লাশগুলো দুই দিন বাগানে রাখার পর ১৪ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে গ্রাম থেকে দুই কিলোমিটার দূরে করাঙ্গী নদীর পাশে বালিমাটিতে তাদের লাশ পুতে রাখা হয়।
এর আগে ৪ শিশু হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগালের দুই ছেলে রুবেল ও জুয়েল। তারা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের পরিবারের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে অন্য আরো কয়েকজনের নাম প্রকাশ করে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত যেসব আসামির নাম এসেছে গতকাল মঙ্গলবার রাতেও সেসব আসামিকে ধরতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ
হবিগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিন আসামির জবানবন্দিতে পুলিশ মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে আট-নয়জন আসামি এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। আসামি আব্দুল আলী বাগালকে রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর জবানবন্দির পর নিশ্চিত হওয়া যাবে কারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত এবং কখন, কোথায়, কীভাবে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে।
শহীদুল ইসলাম জানান, আরজু রিমান্ডে নেওয়া আসামি ঘটনার মূল হোতা আব্দুল আলীর সেকেন্ড ইন কমান্ড। তিনি জবানবন্দিতে নিজের সম্পৃক্ততাসহ অন্যদের সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
এদিকে, চার শিশু হত্যার ঘটনায় পুলিশের গাফিলতি তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় আরো পাঁচদিন বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশু নিখোঁজ হয়। ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে মাটিতে পুতে রাখা অবস্থায় তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।