ফখরুলের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন আদালত, আবার দিতে হবে
বিচার বিভাগ নিয়ে মন্তব্যের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি আদালত। তাই তাঁকে পুনরায় হলফনামা আকারে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ বিচার বিভাগ নিয়ে মির্জা ফখরুলের মন্তব্যের বিষয়ে দাখিল করা ব্যাখ্যার শুনানির সময় এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন—বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।
এর আগে সিলেটে বিচার বিভাগ নিয়ে মন্তব্য করায় মির্জা ফখরুলের কাছে ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাখ্যা চান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ। ফখরুলের জামিনবিষয়ক শুনানি চলাকালে তাঁকে বক্তব্যের বিষয়ে ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে লিখিতভাবে এ ব্যাখ্যা আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।
কিন্তু ২২ ফেব্রুয়ারি আইনজীবীরা ব্যাখ্যা দাখিল করতে গেলে আদালত মির্জা ফখরুলের স্বাক্ষরিত হলফনামা চান। ওই দিন বিকেল ৩টার দিকে মির্জা ফখরুল সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত হয়ে হলফনামা করেন।
আজ এ হলফনামা দাখিলের সময় আদালত মির্জা ফখরুলের বিভিন্ন পত্রিকায় নানা ধরনের বক্তব্য দেখতে পান। এর পর এ বিষয়ে ফখরুলের কাছে ব্যাখ্যা চান আপিল বিভাগ।
আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন মো. আসাদুজ্জামান, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও সগীর হোসেন লিওন।
পরে সগীর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেছেন আদালত। এর মধ্যে মির্জা ফখরুল হলফনামার মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, বিচার বিভাগেরও স্বাধীনতা নেই।’
২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের সময় পল্টন থানার নাশকতার তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়ে রুল জারি করেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিলে গেলে আপিল বিভাগ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেন এবং জামিনের মেয়াদ শেষে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া হাইকোর্টের রুল নিষ্পত্তি করতে বলেন।
হাইকোর্ট গত বছরের ২৪ নভেম্বর রুল নিষ্পত্তি করে ওই তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে তিন মাসের জামিন দেন।
ফখরুলের আইনজীবীদের দাবি, রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে সাধারণত মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামিন হয়। কিন্তু এখানে মাত্র তিন মাসের জামিন দেওয়া হয়েছে। এ কারণে হাইকোর্টের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে মির্জা ফখরুল গত ৭ জানুয়ারি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এ আবেদনের শুনানি শেষে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনটি ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।