সাইবার ক্রাইম বিষয়ে বিচারকদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন : প্রধান বিচারপতি
সাইবার ক্রাইম বিষয়ে বিচারকদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
আজ মঙ্গলবার ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ও ১৬৭ ধারার বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিকালে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন খুব ভালো। এখন দেশে কোনো রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই। অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিক দিয়ে আমরা অনেক ক্ষেত্রে ভারতকে ও ডিঙিয়ে যাচ্ছি।’ অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনিও দেশের নাগরিক আমি ও এই দেশের নাগরিক। দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় সবচাইতে সচেতন হতে হবে।’
সুরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন এসেছে সে সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত। ১৯৭১ সালের পর বর্তমান সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাহলে কেন এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে না?’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দেশে জঙ্গিবাদের বহুমাতৃক রূপ লাভ করেছে। সাইবার ক্রাইম সামনে চলে আসছে। এ সম্পর্কিত অনেক বিষয় আদালতে সামনে আসছে। এসব সংক্রান্ত মামলা বিচারকদের বিচার কাজ করতে হয়। কিন্তু এ বিষয়ে বিচারকদের কোনো ট্রেনিং নেই। বিচারকদের জন্য ট্রেনিং ইনস্টিটিউট দরকার। যেখানে সাইবার সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ট্রেনিং নিতে পারবে। কেননা জঙ্গিবাদ কীভাবে মোকাবিলা করবে সেটা সরকারের রাজনৈতিক ইস্যু, কিন্তু আদালত জঙ্গিবাদ মোকাবিলা ইস্যুতে হিউম্যান রাইটসের সঙ্গে আপস করতে পারে না।’
প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আদালত মানবাধিকার রক্ষায় দায়বদ্ধ। পুলিশ রিফর্ম এর প্রক্রিয়া শুরু করা প্রয়োজন। রিফর্ম করতে হয়তো সময় লাগবে। কিন্তু এটার প্রক্রিয়া শুরু করা প্রয়োজন।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা এ দেশের নাগরিক। আমারা একেবারে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না। ২০০৩ সালে যখন হাইকোর্টের জুনিয়র বিচারপতি ছিলাম। তখন সাইফুজ্জামান বনাম রাষ্ট্র এ সংক্রান্ত একটি মামলায় পুলিশের শ্যোন এরেস্ট নিয়ে নির্দেশনাসহ রায় দিয়েছিলাম। ওই সময় যদি পারি তাহলে এখন পারব না কেন? এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুরাদ রেজা শুনানিতে অংশ গ্রহণ করেন। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। একপর্যায়ে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৪ ও ১৬৭ ধারার বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ১১ মে পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।’