রিট খারিজ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল
ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটটি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে রাষ্ট্রধর্ম আগের মতোই বহাল থাকছে।
আজ সোমবার এ রিটের ওপর শুনানি গ্রহণের কথা ছিল। দুপুর ২টায় বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ শুনানি গ্রহণ না করেই রিটটি খারিজ করে দেওয়ার আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।
এ সময় বিচারপতি বলেন, ‘এ বিষয়ে আর শুনানির কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা এ ব্যাপারে বিস্তারিত পড়ে এসেছি। যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয়।’
১৯৮৮ সালের ৫ জুন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম জাতীয় সংসদে পাস করা হয়। সংশোধনীতে ২(ক) অনুচ্ছেদ সংযুক্ত করে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সম-অধিকার নিশ্চিত করিবেন।’ একই বছরের ৯ জুন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মধ্য দিয়ে এটা আইনে পরিণত হয়।
ওই বছরের আগস্টে স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেনসহ দেশের ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। দীর্ঘদিন পর ২০১১ সালের ৮ জুন হাইকোর্টে একই বিষয়ে ফের সম্পূরক আরো একটি আবেদন করে রিটের শুনানির আবেদন করা হয়। পরে ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রুল জারি করেন। রুলে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেওয়া কেন অবৈধ, বেআইনি ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
আজ হাইকোর্ট রুলটি বাতিল করে দিয়ে রিটটি খারিজের আদেশ দেন।
আদালতে থেকে বেরিয়ে রিট আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ দুপুরে আমরা মামলার শুনানির জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত শুনানি গ্রহণ করেনি। আদালত বলেছেন, যে সংগঠনের নামে এই আবেদনটি করা হয়েছে, তারা এই আবেদন করার যোগ্যতা রাখেন না। এর ফলে আগের মতোই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল থাকল।’
রিট বাতিলের বিষয়ে আপিল করবেন কি-না সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে সুব্রত চৌধুরী বলেন, রায়ের কপি হাতে পেলে এ ব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা বলেন, রিটটি দায়ের করা হয়েছিল স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে। ওই কমিটির কোনো আইনি ভিত্তি নেই। ফলে এটি গ্রহণযোগ্য নয় মনে করেই আদালত খারিজ করে দিয়েছেন। আমি মনে করি, আদালত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।