পাঁচজন মিলে হত্যা করে নাজিমুদ্দিনকে
পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের হৃষিকেশ দাস রোডে গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী নাজিমুদ্দিন সামাদ। ব্যস্ত এলাকায় খোলা দোকানপাটের সামনেই পাঁচজন মিলে কুপিয়ে হত্যা করেছে তাঁকে। ওই সময় গুলিরও আওয়াজ পাওয়া যায় বলে জানান এক প্রত্যক্ষদর্শী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় দোকানদারদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদ। গত বুধবার সন্ধ্যায় ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি সূত্রাপুরের হৃষিকেশ দাস রোডে ছিলেন। এখানেই দুর্বৃত্তরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। ওই সময় অধিকাংশ দোকানই খোলা ছিল এবং রাস্তায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছিল।
বিবিসি জানায়, একটি দর্জির দোকানের সিঁড়ির কাছে নাজিমুদ্দিনের মৃতদেহ পড়ে ছিল। হত্যাকাণ্ডের সময় ওই দোকানের মালিক একাই দোকানে ছিলেন।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক দর্জি দোকানদার বিবিসিকে বলেন, ‘হঠাৎ দেখি রাস্তায় মানুষ ভয়ে ছোটাছুটি করছে আর ওই যুবককে চার-পাঁচজন মিলে কোপাচ্ছে। পিস্তলের গুলির শব্দও হলো। তখন দেখি, আশপাশের সব দোকানের শাটার নামাচ্ছে। আমিও শাটার নামিয়ে দোকানের ভেতরে বসে ছিলাম।’
হৃষিকেশ রোডের চুল কাটার দোকান এবং পাশের মিষ্টির দোকানের কর্মচারীরা বলেন, আতঙ্কে মানুষ ছোটাছুটি করছিল এবং মুহূর্তেই এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। নাজিমুদ্দিনের মৃতদেহ রাস্তার পাশে নর্দমার কাছে পড়ে ছিল।
হৃষিকেশ রোডের অপর এক দোকানদার বিবিসিকে বলেন, ঘটনা শেষ হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনি নিজের দোকানের কাছে এসে দেখেন, যুবকটির মাথায় গভীর আঘাতের চিহ্ন এবং সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। হামলার পরপরই সে মারা যায় বলে মনে করেন ওই দোকানদার। তিনি আরো বলেন, ঘটনার ২৫ মিনিট পর পুলিশ সেখানে গিয়ে মৃতদেহটি মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই সময় এলাকার সব ব্যবসায়ী দ্রুত দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরে যান।
সূত্রাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তপন চন্দ্র সাহা বিবিসিকে বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনে তদন্ত শুরু করেছেন তাঁরা।
বিবিসি জানিয়েছে, কট্টর ইসলামকে সমালোচনা করে নাজিমুদ্দিন অনলাইনে লেখালেখি করতেন। এ কারণেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।