তনু হত্যা : কয়েকদিন বেহুঁশ ছিলেন সোহাগ
বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর কয়েকদিন অজ্ঞান ছিলেন বলে জানিয়েছেন মিজানুর রহমান সোহাগ (২২)। কোথায় তাঁকে নেওয়া হয়েছিল, কারা নিয়ে গিয়েছিল কিছুই মনে করতে পারছেন না তিনি।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় তাঁকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফুটপাতে উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় সোহাগকে খুঁজে পান তাঁর চাচা সেলিম মিয়া।
গত ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকা থেকে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর গত ২৭ মার্চ রাতে কুমিল্লার সেনানিবাসের পাশে নারায়ণসার এলাকায় সোহাগের নিজ বাড়ি থেকে রাত দেড়টায় সাদা পোশাকের কিছু লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাঁর পরিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গিয়েও কোনো সন্ধান পাচ্ছিল না। এ ঘটনায় ৩০ মার্চ সোহাগের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে কুমিল্লার বুড়িচং থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর পর থেকে সোহাগকে উদ্ধার করতে তার পরিবার থানা পুলিশ, র্যাব, ডিজিএফআইসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে যায়।
আজ সকাল ৬টায় সোহাগের ছোট চাচা সেলিম মিয়া ফজরের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নাজিরাবাজার এলাকায় ঘুরতে এসে সোহাগকে দেখতে পান।
মিজানুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো দিছে। সঠিক কোথায় রাখছে বলতে পারব না। কে নিয়া গেছিল জানি না। ভাত দিছে, তরকারি দিছে ভালোই। আমারে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে আমার মনে হচ্ছে না। মনে হয় আমি কয়েকদিন বেহুঁশ ছিলাম। আমি সাথে সাথে (বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার সময়) এখান থেকে বেহুঁশ হয়ে গেছিলাম।’ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হননি বলেও জানান সোহাগ।
সোহাবের বাবা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গেছি, বহুত সহযোগিতা করছে। সকলের কাছে সহযোগিতা পাইছি, সকলের দোয়া চাই। হে (সোহাগ) কইত্যাছে খুব ভালোই ছিল।’
মা বলেন, ‘শাকুরা পাম্পের কাছে হ্যারে কীভাবে রাইখ্যা গেছে কেউ জানে না। আমার দেওর মসজিদ থিক্যা নামাজ পইড়্যা উত্তর দিকে গেছে। যাওয়ার পরে দেখে সোহাগ দাঁড়ায়ে ঘোরে। ঘোরার পরে সোহাগ কইয়্যা ডাক দিছে, সাড়া দেয় না। তারপর মুখের চাইয়া সচেতন হইছে যে, তার কাকা এটা।’
সোহাগ জানান, ২৭ মার্চ রাতে তাঁকে ঘর থেকে বের করে হাত ও চোখ বেঁধে ফেলা হয়। মাঝে মাঝে চোখ খুলে পেছন থেকে খাবার দিত, খাওয়ার পর আবার চোখ বন্ধ করে ফেলত। এ ছাড়া আর কিছুই মনে নেই।