সাংবাদিক পরিচয়ে ঘরে ঢুকে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল থেকে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানের সাক্ষাৎকার নিতে এসেছেন বলে বাসায় ঢোকেন কয়েকজন ব্যক্তি। কিছুক্ষণ পরেই এই ব্যক্তিরা ধরে নিয়ে যান তাঁকে।
আজ শনিবার সকালে গণমাধ্যমকে এমন তথ্যই জানিয়েছেন শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রেহমান।
শফিক রেহমান সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন ভেবে বাসার ভেতরেই ছিলেন তালেয়া রেহমান। পরে বাসার বাবুর্চি তাঁকে জানান, শফিক রেহমানকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তালেয়া রেহমান জানান, ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় শফিক রেহমান বাধা দিয়েছেন বলে বাসার কর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারেন তিনি। এ সময় তাঁকে মারধর করে চুপ থাকতে বলা হয় বলেও শুনেছেন তিনি। বাড়ির দারোয়ান তালেয়াকে জানিয়েছেন, যারা ধরে নিয়ে গেছে তাদের একজনের পোশাকে ডিবি শব্দটি লেখা ছিল।
এ বিষয়ে তালেয়া রেহমান বলেন, “শফিক তখন নিচে নামছে। তখনই ওরা বাসার বাবুর্চিকে বলেছে যে আমরা ডিবি অফিস থেকে এসেছি। ‘আর যখন নিয়ে যাচ্ছে তখন আমার গার্ড দেখেছে যে ওদের একজনের গায়ে ডিবি লেখা আছে।’”
এদিকে শফিক রেহমানের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মিডিয়া উইংয়ের উপকমিশনার মারুফ আহমেদ সরদার সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগে ২০১৫ সালে পল্টন থানা করা একটি মামলায় শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ সকালে তাঁকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। দুপুরে তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে ।
মারুফ আহমেদ সরদার বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের অপহরণসহ হত্যা এবং গুমের ষড়যন্ত্রের মামলায় একজন বাংলাদেশিসহ দুজন আমেরিকানের যুক্তরাষ্ট্রে সাজা হয়েছিল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পল্টন থানায় ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে একটি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা দেখেন যে ২০১৩ সালে শফিক রেহমানসহ আরো একজন আমেরিকায় গিয়ে তাদের সাথে এই ষড়যন্ত্রে অংশ নেন। এই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশ কর্তৃক শফিক রেহমানকে আজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
শফিক রেহমান বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত।
সাংবাদিক শফিক রেহমান বিএনপিপন্থী থিংক ট্যাঙ্ক গ্রুপ জি-নাইনের সঙ্গে যুক্ত। আশির দশকে স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখির জন্য প্রায় ছয় বছর লন্ডনে নির্বাসিত ছিলেন তিনি।