‘দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লেখায় শফিক রেহমান রোষানলে’
‘দুঃশাসন, অপশাসন, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে লেখালেখি করার কারণেই শফিক রেহমান সরকারের রোষানলে পড়েছেন।’
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশ ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এসব কথা বলেন।
দুই সংগঠনের পাঠানো এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অবিলম্বে শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমান ও শওকত মাহমুদের মুক্তি দাবি করেছেন সংগঠনের নেতারা।
সাংবাদিক নেতারা বলেন, সরকার ভিন্নমতের প্রতি কতটা অসহিষ্ণু তা আরেকবার প্রমাণ দিয়েছে সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। সাংবাদিক নেতারা আরো বলেন, ভিন্নমত দমনের বেপরোয়া ও নিষ্ঠুর নীতি সরকারের জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনবে।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘শফিক রেহমান একজন প্রবীণ সাংবাদিক। তিনি কোনো চোর-ডাকাত নন। তাঁকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা বেআইনি। তিনি সরকারের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছেন। এটাই তাঁর অপরাধ। এরশাদ আমলেও তাঁকে নির্যাতন ও নির্বাসন সহ্য করতে হয়েছে।’
অবিলম্বে শফিক রেহমানের মুক্তি দাবি করে রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘গণমাধ্যমের ওপর ধারাবাহিক যে নিপীড়ন চলছে, তারই নতুন নজির সৃষ্টি করেছে সরকার।’
বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘সাংবাদিক পরিচয়ে পুলিশ শফিক রেহমানের বাসায় ঢুকে যেভাবে তাঁকে নাজেহাল করে গ্রেপ্তার করেছে, তা বিবেকবান মানুষকে স্তম্ভিত করেছে। একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের সঙ্গে এমন অন্যায় আচরণ ভিন্নমতের প্রতি সরকারের অশ্রদ্ধারই নগ্ন প্রকাশ।’
শফিক রেহমানকে রিমান্ডে নেওয়ার তীব্র সমালোচনা করে এম আবদুল্লাহ বলেন, সরকারের অপশাসনের সমালোচনা করে লেখালেখির কারণেই শফিক রেহমান রোষানলে পড়েছেন বলে সাংবাদিক সমাজ মনে করে। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দিতে হবে।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবদুল আউয়াল ঠাকুর বলেন, শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে সরকার ভিন্নমত দমনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সাহস করে সত্য লেখাই তাঁর অপরাধ হিসেবে সরকারের কাছে বিবেচিত হয়েছে।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান বলেন, মাহমুদুর রহমান, শওকত মাহমুদ ও শফিক রেহমানের গ্রেপ্তার সরকারের একই মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ। সরকার কোনোভাবে ভিন্নমত সহ্য করতে পারছে না। এ ধরনের পদক্ষেপ সরকারের জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনবে বলে তিনি হুঁশিয়ার করে দেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি সৈয়দ আলী আসফারের সভাপতিত্বে এবং বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব মোদাব্বের হোসেন, নির্বাহী সদস্য কবি কামাল ফরিদ ও আসাদুজ্জমান আসাদ, ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মীর আহাম্মদ মীরু, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহীন হাসনাত, দপ্তর সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, সাংবাদিক শেখ রকিব উদ্দিন, জসিম মেহেদী, মো. বোরহান উদ্দিন, ইব্রাহীম খলিল, আজাদ হোসেন সুমন, সরদার শাহাদাত হোসেন, মতিউর রহমান সরদার, জেসমিন জুঁই প্রমুখ।