দেশে আইএস নামে কোনো সংগঠন নেই : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘দেশে আইএস নামে কোনো সংগঠন নেই। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি বিশেষ ষড়যন্ত্র। আমরা প্রত্যেকটি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটক করেছি। তারা (আটককৃতরা) আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় বলে স্বীকার করেছে।’
আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে দশম সংসদের দশম অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে দেশে বিভিন্ন সময়ে কুপিয়ে হত্যা ও হত্যা-পরবর্তী সময়ে আইএসের দায় স্বীকার নিয়ে জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছেন অন্তত চারজন সংসদ সদস্য।
পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান প্রশ্ন করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীসহ সব ধরনের হত্যাকাণ্ডে চাপাতির ব্যবহার করা হয়েছে। এই ধরনের কুপিয়ে হত্যার বিষয়ে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কি না।
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশ তৎপর রয়েছে। যতগুলো এই ধরনের খুন হয়েছে সবগুলোই আমরা তদন্ত করে চিহ্নিত (আইডেনটিফাই) করতে সক্ষম হয়েছি। প্রায় সবগুলো ক্ষেত্রেই আসামিকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চাপাতি দিয়ে খুন। এগুলো একটি দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি বিশেষ ষড়যন্ত্র। যা আমরা সব সময় বলে এসেছি। আমাদের প্রশাসন এবং গোয়েন্দারা এ ক্ষেত্রে কাজ করছে এবং তারা সময়মতোই এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে। পাশাপাশি ধরেও ফেলছে। কাজেই এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলায় যারা নিয়োজিত আছে, তারা যথার্থভাবেই প্রচেষ্টা নিচ্ছে এবং গোয়েন্দারা তৎপর রয়েছে। এটা আশ্বস্ত করতে চাই।’
সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের পর আইএসের দায় স্বীকার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসব হত্যাকাণ্ডের পর যারাই গ্রেপ্তার হয়েছে তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে তাদের কেউ আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তারা হোম গ্রোন কিছু জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে থেকে এসব তৎপরতা চালাচ্ছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সব ষড়যন্ত্র বানচাল করেছে। আমরা তাদের ষড়যন্ত্র ধূলিসাৎ করেছি। আমাদের জনগণ এ সমস্ত কিছু পছন্দ করে না।’
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘জঙ্গি দমনে আমরা নিরাপত্তা বাহিনী ঢেলে সাজাচ্ছি। আমরা কাউন্টার টেররিজম নামে একটি নতুন ইউনিট চালু করেছি। যার দায়িত্ব থাকবে এই সমস্ত সন্ত্রাস, এই সমস্ত জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণ করা। অ্যাটাক করার আগেই তাদের আস্তানা দখল করা, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে সোপর্দ করা। এ ছাড়া সাইবার ক্রাইম নামে আরেকটা ইউনিট গঠন করেছি। কাউন্টার টেররিজম বলেন, আর সাইবার ক্রাইম বলেন সবগুলো জঙ্গি দমনে করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসব জঙ্গিগোষ্ঠী মাঝেমধ্যে মাথাচাড়া দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা নেয়। তাবেলা সিজার হত্যাকাণ্ড, নেভির মসজিদে অ্যাটাক, শিয়া মসজিদের মুয়াজ্জিনকে হত্যা করা এর সবগুলো একটা পরিকল্পনার অংশ। আমরা সবগুলো চিহ্নিত করে সমস্ত জঙ্গিদের ধরেছি, যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তারা সবাই স্বীকার করেছে তারা আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। দেশেই এসব জঙ্গিদের উত্থান। এখান থেকেই তারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যথার্থভাবেই এদের চিহ্নত করেছে। জনগণ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ পছন্দ করে না বলে তাদের নিয়ে আমরা জঙ্গিদের সব কিছুই ব্যর্থ করেছি। এজন্যই আমরা জঙ্গি দমনে সক্ষম হচ্ছি।’