নিজামীর রিভিউ শুনানি শুরু
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
গত ১০ এপ্রিল আসামিপক্ষে সময়ের আবেদন করলে আপিল বিভাগ ৩ মে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ৩০ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ নিজামীর রিভিউ আবেদন দ্রুত শুনানির জন্য দিন নির্ধারণের আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার গত ৩ এপ্রিল বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন।
৩ এপ্রিল বিষয়টি আপিল বিভাগে উত্থাপিত হলে আসামিপক্ষ সময় চায়। পরে আদালত শুনানি এক সপ্তাহ মুলতবির আদেশ দেন। গত ১০ এপ্রিল বিষয়টি উত্থাপিত হলে আসামিপক্ষ আবার সময় চায়। পরে আদালত ৩ মে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আপিলেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহালের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে গত ২৯ মার্চ আবেদন করেন নিজামী। ৭০ পৃষ্ঠার মূল রিভিউ আবেদনের সঙ্গে ২২৯ পৃষ্ঠার নথিপত্রে তাঁর দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে ৪৬টি (গ্রাউন্ড) যুক্তি তুলে ধরা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী রিভিউ নিষ্পত্তির আগে নিজামীর দণ্ড কার্যকর করা যাবে না। আর রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে সেই রায়ের অনুলিপি কারাগারে যাবে এবং কারা কর্তৃপক্ষ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসামির ফাঁসি কার্যকর করবে।
এর আগে গত ১৫ মার্চ নিজামীর আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাসহ আপিল বিভাগের চার বিচারপতির স্বাক্ষরের পর এ রায় প্রকাশ করা হয়।
গত ৬ জানুয়ারি বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনাকারী ও উসকানিদাতাসহ মানবতাবিরোধী তিনটি অপরাধের দায়ে দোষী জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে নিজামীর করা আপিল আংশিক মঞ্জুর করে রায় ঘোষণা করা হয়।
বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর মতিউর রহমান নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেন যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আনা আপিলের রায় গত ৬ জানুয়ারি ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ জামায়াতের এই শীর্ষ নেতার বিষয়ে রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ প্রকাশ করেন। পরে ১৫ মার্চ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।