ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করবে সরকার
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, ‘হাইকোর্ট ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ঘোষণা করে যে রায় দিয়েছেন তাতে আমি সংক্ষুব্ধ হয়েছি। রায়ের পর পরই আমরা আদালত থেকে আপিল করার জন্য রায়ের সার্টিফায়েড কপি নিয়েছি। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করব।’
একইসঙ্গে আগামী রোববার এই রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে চেম্বার বিচারপতির কাছে আবেদন করা হবে বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
রায়ের বিরোধিতা করার কারণ জানতে চাইলে মাহবুবে আলম বলেন, ১৯৭২ সালে সংবিধান যখন প্রণয়ন করা হয়েছিল তখন বিচারপতিদের অপসারণের বিষয়টি সংবিধানে উল্লেখ ছিল। কিন্তু পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সামরিক সরকার এটি সংশোধন করে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাত থেকে নিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে দেয়। যেহেতু এর আগে সামরিক শাসনামলকে হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন সেহেতু তাদের কার্যক্রমও অবৈধ। তাই বিচারপতিদের অপসারণে সামরিক সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেটিও অবৈধ।
সংবিধান প্রণয়নের সময় যেহেতু সংসদ সদস্যদের হাতেই বিচারপতিদের অভিসংশন বা অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল তাই এখন সেটিই বহাল চান অ্যাটর্নি জেনারেল। আর এ কারণেই আজ হাইকোর্টের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দুপুরে হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের রায়ে এ সংক্রান্ত আদেশ দেওয়া হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে এই সংশোধনী বাতিল করা হয়। এর ফলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আর জাতীয় সংসদের সদস্যদের হাতে থাকল না।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে সংশোধনী আনে সরকার, যা ষোড়শ সংশোধনী নামে পরিচিত। সংশোধনীতে বলা হয়, ‘প্রমাণিত অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোনো বিচারককে অপসারিত করা যাইবে না।’