নিজামীর জন্মস্থান পাবনায় মিষ্টি বিতরণ
জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশ বহাল থাকায় খুশি তাঁর জন্মস্থান পাবনার সর্বস্তরের মানুষ।
রিভিউ শুনানি খারিজ হওয়ার ঘোষণার পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহরে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন। এ ছাড়া যে সাঁথিয়া ও বেড়ার যেসব হত্যাকাণ্ডের মামলায় নিজামীর ফাঁসির আদেশ হয় সেসব এলাকায় মিষ্টি বিতরণ হয়েছে।
ধুলাউড়ি গ্রামের শহীদ ডা. আবদুল আউয়ালের ছেলে লিয়াকত আলী তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি আমার বাবার হত্যার সঠিক বিচার পেয়েছি। দেশবাসী একজন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় পেয়েছে এতে আমরা আনন্দিত।’
ধুলাউড়ির হত্যাকাণ্ডে শহীদ আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুর রউফ মন্টু বলেন, ‘নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর হলে সেই দিন আমরা আরো খুশি হব।’
ডেমড়া গ্রামের রণজিৎ কুমার পাল বলেন, ‘আমার ঠাকুরদাদা, বাবা, কাকাসহ পরিবারের সাতজনকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা।’ তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘নিজামীর ফাঁসি কার্যকর দেখে মরতে পারলে শান্তি পেতাম।’
ধুলাউড়ির পার্শ্ববর্তী ডহরজানি গ্রামের জামাল উদ্দিন, যিনি নিজামীর মামলার বাদীপক্ষের সাক্ষী ছিলেন। তিনি বলেন, ‘নিজামীর বিচার হয়েছে। দ্রুত রায় কার্যকর করা হোক।’ তিনি আরো বলেন, ‘সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই। আমরা এই ফাঁসির রায়ে খুশি। এখন চাই রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন।’
সাঁথিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন (নিজামীর মামলার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী) বলেন, ‘মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় উচ্চ আদালত কর্তৃক বলবৎ থাকায় আমরা মহাখুশি। এখন বাস্তবায়ন দেখতে চাই।’
পাবনা জেলা মুত্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল বাতেন বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় কুখ্যাত রাজাকার, আল বদর, আল শামসের নেতা নিজামীর মৃত্যুদণ্ড আপিল রায়ে বহাল থাকায় আমরা খুশি। এ রায় আমাদের প্রত্যাশিত ছিল।’
এদিকে রায় ঘোষণার পর শহরে আনন্দ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করে।
নিজামীর রায় ঘিরে পাবনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আলমগীর কবির বলেন, রায় ঘিরে যাতে কোনো নাশকতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি রয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ও নিজামীর নিজ এলাকা সাঁথিয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও টহল জোরদার করা হয়েছে।
পাবনা জেলা পরিষদ প্রশাসক এম সাইদুল হক চুন্নু বলেন, নিজামীর রায় বলবৎ থাকার মধ্য দিয়ে পাবনাবাসী কলঙ্কমুক্ত হলো।