সালাহ উদ্দিনকে বের করার দায়িত্ব পুলিশের : মানবাধিকার কমিশন
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, নিখোঁজ হওয়া বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করার দায়িত্ব পুলিশের। তাঁকে উদ্ধার করার মধ্য দিয়ে পুলিশকে প্রমাণ করতে হবে তারা তাঁকে আটক করেনি।
আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় মিজানুর রহমান এ কথা বলেন। ‘আন্তর্জাতিক বর্ণ-বৈষম্য বিলোপ দিবস’ উপলক্ষে মাইনরিটি রাইটস ফোরামের উদ্যোগে ‘জাত-পাত, বর্ণ-বৈষম্য বিলোপ কর : সম-অধিকার সমমর্যাদা নিশ্চিত কর’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়।
পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হককে উদ্দেশ করে মিজানুর রহমান বলেন, ‘এটা কি কখনো গ্রহণযোগ্য হতে পারে একজন মানুষ উধাও হয়ে যাবে এবং তার কোনো রকম অবস্থান সম্পর্কে আমরা জানতে পারব না। আমাদের কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করেনি এই সত্যতা আমরা তখনই গ্রহণ করব যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুততার সঙ্গে তাঁকে আমাদের জনসম্মুখে বা আদালতের সামনে হাজির করে প্রমাণ করবে, এই যে আমরা তাঁকে উদ্ধার করেছি এবং তিনি রয়েছেন। আমরা তাঁকে আটক করিনি। অন্যরা কেউ করেছে। আমরা তাঁকে উদ্ধার করেছি।’
ড. মিজান আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে সব সময় বিরোধী দল সরকারের দমন-পীড়নের শিকার হয়। যদি আপনি ক্ষমতাসীন দলের হয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্য পোয়াবারো; আর যদি আপনি বিরোধী দলের হয়ে থাকেন, আপনার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ প্রতি পদে পদে হতে পারে।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এ সময় দেশের রাজনৈতিক নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, ‘আপনার রাজনীতি ও অবস্থানের কারণে একজন মানুষের হদিস মিলবে না, এটি কি কখনো গ্রহণযোগ্য হতে পারে। রাষ্ট্রের যেকোনো নাগরিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব সর্বপ্রথম এবং প্রধানত বর্তায় রাষ্ট্রের ওপরে এবং রাষ্ট্র কখনোই, কোনোভাবে এ দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না।’
বাংলাদেশ এখনো প্রকৃতপক্ষে একটি ধর্মনিরপেক্ষ এবং অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হয়ে উঠতে পারেনি উল্লেখ্য করে মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে কয়েক প্লাটুন র্যাব-পুলিশ নিয়োজিত থাকে এবং তারা যদি সেখানকার নিরাপত্তার বিধান করতে পারে, তাহলে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে যখন পুণ্যস্নান হবে, তখন রাষ্ট্র কেন সেখানে পুলিশ-র্যাব নিয়োজিত করবে না। কেন অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে মানুষকে প্রাণ দিতে হবে? রাষ্ট্রের কি এতটুকু দায়িত্ব ছিল না যে সেখানকার নদীতে কচুরিপানা পরিষ্কার করে তাদের স্নান করার ব্যবস্থা করে দেওয়ার।
মাইনরিটি রাইটস ফোরাম বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মানস কুমার মিত্রের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাইনরিটি রাইটস ফোরামের সম্পাদক অ্যাডভোকেট উৎপল বিশ্বাস।