নাম বললে ধমকায় কেন, প্রশ্ন তনুর মায়ের
কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি অনুষ্ঠানে গান করার কথা ছিল সোহাগী জাহান তনুর। ওই অনুষ্ঠানে না গিয়ে সিলেট চলে যান তিনি। আর এ কারণেই তনুকে হত্যা করা হয়। আর এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সেনাসদস্যরাই।
urgentPhoto
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপের সময় এ দাবি করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর মা আনোয়ারা বেগম।
আজ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কুমিল্লা অঞ্চলের কার্যালয়ে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দের নেতৃত্বে সাত সদস্যের তদন্ত দল তনুর পরিবারের চার সদস্যসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
সিআইডি কার্যালয়ে প্রবেশের আগে তনুর মা আনোয়ারা বেগম গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। সার্জেন্ট জাহিদ ও তাঁর স্ত্রীকে আটক করলে সব রহস্য উন্মোচিত হবে বলে দাবি করেন তিনি। তনু জাহিদের সন্তানদের প্রাইভেট পড়াত বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘তনুকে সেনাবাহিনী লোকেরা মেরেছে। সেনাকল্যাণে অনুষ্ঠান করবে না বলে জানায় তনু। বৃহস্পতিবার রাতে গান করার কথা ছিল, বৃহস্পতিবার চলে যায় সিলেট। শুক্রবার রাত ১২টার দিকে আসে। রোববার ৭টায় তো মেরেই ফেলল। রাস্তা দুই থেকে তিন ঘণ্টা বন্ধ করে রাখা হয়। কেন? আমার মেয়েকে মেরে লাশ ফেলা হয় জঙ্গলে। সার্জেন্ট জাহিদ আর জাহিদের স্ত্রী জানে। জিওসি কমান্ডার আর আর্মি ইউনিটের সবাই জানে মারার কথা। আর্মির লোক মেরেছে আবার নাম বললে ধমকায় কেন? আমি কমান্ডারকে বলতে পারি, আপনার লোকে মেরেছে, আপনিও জানেন।’
আনোয়ারা বলেন, ‘আমার মেয়ের চুল কেটে দেওয়া হয়েছে। শরীরের প্রতিটা অঙ্গে মারধর করা হয়েছে।’
এ সময় আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে ছিলেন তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, চাচাতো বোন লাইজু ও ভাই আনোয়ার।
তনুর পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, সেনা ইউনিটের অনুষ্ঠানে গান না করায় তনুকে হত্যা করা হয়। গত ২০ মার্চ সেনানিবাসের অভ্যন্তরে সার্জেন্ট জাহিদের বাসায় তাঁর শিশুদের প্রাইভেট পড়ানোর জন্য যায় তনু। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করে রাত ১০টায় সেনানিবাসের অভ্যন্তরে তনুর বাসার কিছু দূরে কালভার্টের সামনে তনুর লাশ পাওয়া যায়। জড়িতদের আটক না করে বারবার তনুর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানান তনুর বাবা ইয়ার হোসেন।
তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। তনু হত্যার ৫০ দিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।