সময়সীমার পরও সিম চালু রাখার নির্দেশনা প্রার্থনা
উচ্চ আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগে সিম সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সরকারি ঘোষণার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে একটি আবেদন করা হয়েছে। আজ সোমবার নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটকারী আইনজীবী অনিক আর হক এ আবেদন করেন। আগামীকাল মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
অনিক আর হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘হাইকোর্ট সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে বৈধ বলে রায় দেন। কিন্তু এখনো পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়নি। তার আগে সরকার নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করলে ৩১ মের পর অনিবন্ধিত সিম সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। অথচ আমরা এর বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করব বলে ঘোষণা দিয়েছি। তাই সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেছি।’
এর আগে গত ১২ এপ্রিল বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন এবং বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। তবে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মাধ্যমে সংরক্ষণ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, নির্বাচন কমিশন যেন আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে। এ ছাড়া বিটিআরসির দেওয়া নিয়ম যথাযথভাবে অনুসরণ করতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আঙুলের ছাপের অপব্যবহার হলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১৪ মার্চ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম কেন অবৈধ নয় তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি), মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোসহ ১৩ জনকে জবাব দিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে দুদিন শুনানির পর রুল নিষ্পত্তি করে আজ এই রায় দিলেন আদালত। এর আগে গত ৯ মার্চ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এস এম এনামুল হক নামের এক আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
গত ১৬ ডিসেম্বর সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় আঙুলের ছাপ না দিয়ে এখন আর নতুন সিম কেনা যাচ্ছে না। পাশাপাশি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুরোনো সিমের পুনর্নিবন্ধন চলছে, যা এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনার কথা বলে আসছেন ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
ভুয়া পরিচয়ে অথবা নিবন্ধন ছাড়া সিম কিনে নানা অপরাধে ব্যবহারের অভিযোগ বাড়তে থাকায় সম্প্রতি গ্রাহকদের তথ্য যাচাই ও সিম পুনর্নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর মোবাইল গ্রাহকদের সিমের তথ্য যাচাইয়ে শুরু হয় জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার ব্যবহারের প্রক্রিয়া।
গত ৪ এপ্রিল আঙুলের ছাপ নিয়ে জনমনে শঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে সিম নিবন্ধনের জন্য সংগৃহীত আঙুলের ছাপের অপব্যবহার করলে মোবাইল ফোন অপারেটরদের ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা।