ট্রাইব্যুনাল থেকে রায় কারাগারের পথে
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়া রায়ের অনুলিপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার কিছু পরে ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি রেজিস্ট্রার আফতাবউজ্জামানের নেতৃত্বে তিন কর্মকর্তা রায়ের অনুলিপি নিয়ে রওনা দেন।
এর আগে আজ বিকেল ৪টা ৫২ মিনিটে হাইকোর্টের সহকারী রেজিস্ট্রার মেহেদী হাসান ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে রায়ের অনুলিপি পৌঁছে দেন। ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি রেজিস্ট্রার আফতাবউজ্জামান তা গ্রহণ করেন।
বিধি অনুযায়ী রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পরই কারা কর্তৃপক্ষ রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু করবে।
এর আগে আজ দুপুরে রায়ে সই করেন প্রধান বিচারপতিসহ চার বিচারপতি। তাঁদের সই শেষে ৩৬ পৃষ্ঠার রায়টি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
রায়টি ফটোকপি করে এক কপি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে রাখা হয়। রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজ শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আসামিপক্ষের আইনজীবী ও ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছেও রায়ের অনুলিপি পাঠানো হবে।
বিধি অনুযায়ী রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর তা কামারুজ্জামানকে পড়ে শোনানোসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে কারা কর্তৃপক্ষ।
গত সোমবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। চলতি বছর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুটিতে যাবজ্জীবন ও একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল