জাকির নায়েকের পিস টিভি বন্ধের সিদ্ধান্ত
জাকির নায়েকের পিস টিভির সম্প্রচার বাংলাদেশে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর গুলশান হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অন্তত দুজন এই টিভি চ্যানেলে প্রচারিত জাকির নায়েকের বক্তব্যের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে প্ররোচিত হয়েছিল বলে প্রকাশ পেয়েছে। এরই জেরে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে ‘জঙ্গিবাদে উৎসাহ জোগানোর’ অভিযোগ ওঠার পর তার পিস টিভির সম্প্রচার বাংলাদেশে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
ধর্মীয় বক্তা জাকির নায়েক পরিচালিত মুম্বাইভিত্তিক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান পিস টিভি। যদিও টেলিভিশন চ্যানেলটির কার্যক্রম সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে প্রচারিত হয়।
পিস টিভিতে ধর্ম নিয়ে আলোচনায় ইসলামের যে ব্যাখ্যা তিনি দেন, তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আর এ কারণে এই ইসলামী বক্তার বক্তব্য প্রচার বিশ্বের অনেক দেশেই নিষিদ্ধ। গুলশান হত্যাকাণ্ডের জেরে ভারতও পিস টিভি সম্প্রচার নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আমির হোসেন আমু বলেন, ‘জঙ্গিবাদ হঠাতে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের বয়ান নজরদারি করা হবে। আর যারা খুতবা পড়াবেন, তাঁরা যেন প্রকৃত ধর্মীয় অনুশাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন, সে বিষয়টিও দেখা হবে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, ‘পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল বাড়াতে হবে। বিশেষ করে রপ্তারিকারক ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে তাদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।’
এ ছাড়া গুলশান এলাকায় অননুমোদিত স্কুল, কলেজ, হোটেল ও রেস্তোরাঁ বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে ঈদের ছুটির পর বিশেষ নিরাপত্তাবিষয়ক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি অংশ নেন।
এ ছাড়া পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, ঢাকার পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াসহ বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।