পরিবেশের ইতিহাসে ১২ জুলাই কলঙ্কের দিন
পরিবেশ ও বন সংরক্ষণের ইতিহাসে ১২ জুলাই এখন থেকে কলঙ্কজনক দিন হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল।
আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল এ মন্তব্য করেন।
সুন্দরবন রক্ষায় অবিলম্বে এ চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন কমিটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল বলেন, ‘৫৩টি সদস্য সংগঠনের পক্ষ থেকে আমি তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। আগত দিনসমূহে বাংলাদেশের পরিবেশ ও বন সংরক্ষণের ইতিহাসে ১২ জুলাই একটি কলঙ্কজনক ও দুঃখজনক দিন হিসেবে বিবেচিত হবে।’
এ সময় চার দফা দাবি তুলে ধরেন সুলতানা কামাল। দাবিগুলো হলো—
১. রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়ন চুক্তি বাতিল করতে হবে।
২. রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অবিলম্বে বন্ধ ও নিরাপদ দূরত্বে স্থানান্তর করতে হবে।
৩. সুন্দরবনের পাশে প্রস্তাবিত ওরিয়নসহ অন্যান্য সুন্দরবনের জন্য ক্ষতিকর সকল অবকাঠামো ও কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
৪. সুন্দরবন রক্ষায় বিজ্ঞানসম্মত সার্বিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, এম এম আকাশ, খুশী কবির।
দেশের পরিবেশ অধিদপ্তরই এখনো এ প্রকল্পের পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়নি। তার পরও কীভাবে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।
সরকারি হিসাবে সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। সুন্দরবনের কাছাকাছি হওয়ায় শুরু থেকেই এ প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছেন পরিবেশবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অনেকেই। তাঁদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নানা বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষাও তুলে ধরা হয়েছে। আলাপ-আলোচনা হয়েছে সরকারের সঙ্গেও। এ প্রকল্পের ফলে সুন্দরবন মারাত্মক হুমকিতে পড়বে, এমনকি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথাও অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন তাঁরা।
এ ধরনের আশঙ্কার মধ্যেও মঙ্গলবার বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি এবং ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই হয়েছে। এটি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা।